নিজের কোচিং ক্যারিয়ারে অনেক তারকা খেলোয়াড়দের সামলেছেন ইতালিয়ান কোচ ম্যাসিমিলানো অ্যালেগ্রি। ইতালির অন্যতম সেরা দুই ক্লাব জুভেন্টাস ও এসি মিলানে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রায় ১০ বছর। সে অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি জানিয়েছেন, অন্য যেকোন খেলোয়াড়ের চেয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মানসিকতা আলাদা।রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ২০১৮-১৯ মৌসুমে জুভেন্টাসে নাম লেখান রোনালদো। সেটিই আবার ছিল জুভেন্টাসে অ্যালেগ্রির শেষ মৌসুম। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই রোনালদোর সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন অ্যালেগ্রি। যা ক্লাবকেও এনে দেয় সাফল্য। জুভেন্টাসে সিরি ‘আ’ জয়ে রোনালদো করেছিলেন ২১টি গোল।
নিজের কোচিং ক্যারিয়ারের দিকে আলোকপাত করে অ্যালেগ্রি বলেছেন, ‘আমার দলে অনেক শক্তিশালী খেলোয়াড় ছিল, যাদের মানসিকতা বেশ দৃঢ়। জর্জিয়ো কিয়েল্লিনি এবং আলেসান্দ্রো নেস্তার মতো ডিফেন্ডার, জেনারো গাত্তুসো এবং ক্ল্যারেন্স সেডর্ফের মতো মিডফিল্ডার ও জ্বলাতান ইব্রাহিমোভিচ এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো স্ট্রাইকারদের আমি পেয়েছি।’তার মতে নতুন বছরে নতুন লক্ষ্য নিয়ে খেলাটাই রোনালদোকে আলাদা করে রাখে, ‘মানসিক দিক থেকে রোনালদো শীর্ষমানের খেলোয়াড়। অন্য সবার চেয়ে রোনালদোর মাথা ভিন্ন রকম। সে পাঁচটা ব্যালন ডি অর, পাঁচটা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও পর্তুগালের হয়ে একটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। এটা সত্যিই কঠিন অর্জন। সে প্রতিবারই অন্যদের চেয়ে আলাদা থাকে। প্রতি বছর তার নতুন লক্ষ্য থাকে।’
এসময় আরও বেশি করে খেলোয়াড়দের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে অ্যালেগ্রি বলেন, ‘কোন কোচের উচিত নয় খেলোয়াড়দের জন্য উদ্বিগ্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। আপনি যদি শুধু নিজের পরিকল্পনা, নিজের চিন্তাভাবনা নিয়েই এগুতে চান এবং নিজের মনুষত্বকে বের করে না আনেন, তাহলে এটি অনেক বড় ভুল হয়ে দাঁড়াবে।’তিনি আরও যোগ করেন, ‘খেলোয়াড়রাই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে থাকে। আমি মানি যে ট্রেইনার এবং সংগঠকদের পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যক্তি খেলোয়াড়রা যেন ভালো খেলে। একজন খেলোয়াড়ের দৌড়ানো দেখেই বুঝতে পারি সে কেমন অনুভব করছে। বডি ল্যাঙ্গুয়েজই অনেক কিছু বলে দেয়।জুভেন্টাসের কোচের মতে, একজন প্রশিক্ষকের তার দায়িত্বের বাইরে একজন মনোবিদও হওয়া উচিত। কেননা খেলাটা মূলত মানসিক দিক থেকেই বেশি হয়। বাকিটা থাকে পরিকল্পনার ওপর।
অ্যালেগ্রির ভাষ্য, ‘একজন প্রশিক্ষকের অবশ্যই মনোবিদও হতে হবে। কারণ ৮০ ভাগই মানসিক খেলা, বাকি ২০ ভাগ পরিকল্পনার বিষয়। আমাদেরকে খেলোয়াড়ের মনোজগতের কথাও ভাবতে হয়। কারণ তারা তরুণ, তারা ছোট। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলতে হয়, জানতে হয়, সমস্যাগুলো বুঝতে হয়। একজন ১৮ বছরের ছেলের সঙ্গে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের সমস্যা মিলবে না। তাদের সব বিষয়ও বুঝতে হয়। একজন কোচের প্রথম গুণই হওয়া উচিত মনস্তত্ত্ব।’