ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ওপর নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। বিএনপির ওপর বারবার হামলার ঘটনা ঘটলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের আগে বিএনপির কর্মী ও এজেন্টরা আতঙ্কে রয়েছেন।
বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবনে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করে এসব অভিযোগ করে। তবে বিএনপির এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভারপ্রাপ্ত সচিব জানিয়েছেন, বিএনপির সব অভিযোগ সঠিক নয়।
এ আসনে আগামী ১২ নভেম্বর ভোটগ্রহণ। বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএনপির প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিএনপির প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমরা যেখানেই কর্মসূচি দেই, সেখানেই সরকারি দলের ক্যাডার বাহিনী হামলা করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাসায় বাসায় গিয়ে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। আমাদের পোলিং এজেন্টরা আতঙ্কে ভুগছে। এমনকি অহেতুক ভয়-ভীতি দেখানোর জন্য আমার পাশের বাসায় এসেও পুলিশ হুমকি দিয়ে গেছে। তিনি বলেন, অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের ওপর ইসির নিয়ন্ত্রণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আমানউল্লাহ আমান বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা জনগণকে দেখাতে চাই, এত প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সর্বশেষ ঢাকা-১৮ আসনে দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থানে থেকে সাংবিধানিক পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেন কী না তা দেখতে সর্বশেষ অবস্থা পর্যন্ত থাকতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে কী না- তা সর্বশেষ পর্যন্ত দেখব। পরবর্তীতে কী হবে তা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে বিএনপির সব অভিযোগ বস্তুনিষ্ঠ নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, তারা যেসব অভিযোগ দিয়েছে তার প্রতিটি তদন্ত করেছি। নির্বাচন কমিশন সব অভিযোগের বিষয়ে সিরিয়াসলি টেকঅফ (গুরুত্ব দিয়েছে) করেছে। মাঠ প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ফুল দেয়ার যে ছবি দেয়া হয়েছে সেটির তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী এলাকার ওসি ও ডিসি বিএনপি প্রার্থীর ফোন ধরেন না- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ফোন না ধরার অভিযোগ বস্তুনিষ্ঠ নয়।