বারবার আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতা এবং হতাশায় বিএনপির রাজনীতিতে সংকটের কালো ছায়া পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দেশে এ মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। প্রকৃতপক্ষে আস্থার প্রকট সংকট চলছে বিএনপির রাজনীতিতে। দলটির নেতৃত্বে পারস্পরিক আস্থার সংকট এখন চরমে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু গণতন্ত্র একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে আমাদের আরও পথ চলতে হবে। আমরা জানতে চাই বিএনপি কোন গণতন্ত্রের কথা বলছে? তাদের দেখানো হালুয়া-রুটির গণতন্ত্র? রাতে দেয়া কারফিউ গণতন্ত্র? তাদের গণতন্ত্র ছিল এক চিমটি লবণ, এক মুঠো গুড় আর আধা সের পানির সঙ্গে মিশ্রণের গণতন্ত্র। বিএনপি’র উদ্দেশে তিনি বলেন, গণতন্ত্র যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে জনমতকে সম্মান করুন। ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আমরা জনগণের ওপর আস্থাশীল। শেখ হাসিনার রাজনীতি জনগণকে ঘিরেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। বরং নির্বাচনকালে কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সহযোগিতা করা সরকারের দায়িত্ব। কমিশন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে তা যাচাই-বাছাই করে আমাদের বক্তব্য থাকলে তা আমরা কমিশনকে জানাব। বিএনপির কোনো বক্তব্য থাকলে কিংবা দ্বিমত থাকলে কমিশনকে জানাতে পারে।
‘সরকার মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির কথা শুনে হাঁসব না কাঁদব, ভেবে পাই না। যারা এখনও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দোসরদের বিশ্বস্ত আশ্রয়, তাদের মুখে এ কথা মানায় না।
তিনি বলেন, একটি মতলবি মহল সম্প্রতি ধর্মীয় ইস্যুসহ নানা ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা সামাজিক শান্তি, স্বস্তি এবং আমাদের সব ধর্মের মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান নষ্ট করতে চায়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্প্রতি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের প্রতিটি ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করে পোস্ট দেয়া প্রত্যাশিত নয়। এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। গুজবে ভর করে কারও জীবন ও সম্পদের ওপর আঘাত করবেন না। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি কেউ কটাক্ষ করবেন না। পৃথিবীর সব ধর্মবিশ্বাসই অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে যে কোনো আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।