মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র (কার্টুন) প্রকাশের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহসহ সব ধর্ম-বর্ণ মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে দলটি।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পবিত্র ধর্ম ইসলাম এবং মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ও তার পক্ষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অবস্থান গ্রহণকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মুসলমানসহ সব ধর্ম-বর্ণের কোটি কোটি যুক্তিবাদী ধর্মপ্রাণ মানুষ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চলেছে, বিএনপি তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছে।
তিনি বলেন, সব ধর্মের মানুষের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিএনপি মনে করে যে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মনেতার অবমাননা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। রাসুল (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশকে বিএনপি তাই একটি গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য করে এবং তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী বিএনপি মনে করে যে, মহানবী (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশ ও তা সমর্থন করা যেমন ধর্মবিদ্বেষকে উসকে দেয়ার মতো অপরাধ, তেমনি প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে মানুষ হত্যাও গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে যিনি মানবতার ধর্ম ইসলাম প্রচার করেছেন সেই মহানবী (সা.)-এর দীক্ষাই হোক আমাদের নির্দেশক।
‘বিএনপি আরও মনে করে যে, পবিত্র ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর অনুসারীদের আবেগকে আহত করে বিশ্বব্যাপী যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে, তার গোটা মানবজাতির ঐক্য ও মিলনের জন্য এক অনতিক্রমনীয় হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দেয়ার মতো মানবিক ও গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে উদ্যোগী হতে হবে। কারণ ঘৃণা ও সন্ত্রাস- কোনোটাই বিশ্ববাসীর কাম্য নয়।
মহানবী (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ সরকার কোনটাতে প্রতিবাদ জানায় আর কোনটাতে জানায় না– এটি বলা দুরূহ। কারণ আপনারা লক্ষ্য করে দেখেছেন যে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব যেখানে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়, সীমান্তে গুলি করে মারা হয় আমাদের নাগরিকদের, সে বিষয়ে কিন্তু আমাদের সরকার কোনো প্রতিবাদ জানায় না বা প্রতিবাদ করে না। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের যে ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা বা তাদের যেসব চিন্তা-ভাবনা, সেগুলোকে লক্ষ্য করে বা সেগুলোকে কেন্দ্র করে সরকার কখনও সেই ধরনের স্ট্যান্ড তারা নেয়নি।
‘আমার মনে হয়, সেই কারণে হয়তো তারা (সরকার) এখন পর্যন্ত কোনো রিঅ্যাকশন দেয়নি। সেটিতে তাদের যে চরিত্র তা পরিষ্কার হয়ে ওঠে।
গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।