চলনবিলে তখন গভীররাত। সাঁসাঁ শব্দ হচ্ছিল। বড় বড় পানির ঢেউ, কোথাও কোন বাড়ি ঘর নেই, নেই কোন আলো, জীবন ঝুঁকির সম্মুখে, নেই কোনদিক, ভেবেই নিয়েছিল তারা এ বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারবেনা। গভীর রাতে নাটোরের সিংড়ার চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় নৌকা ভ্রমন করতে গিয়ে পথ হারানো নারী ও শিশু সহ ৪০ জনের মনে তখন এই কথাই কেবল মনে হচ্ছিল,”বলছিলেন আত্রাই উপজেলার বলরামচক গ্রামের অমৃত সরকারের ছেলে পিয়াস সরকার নামে নৌকা ভ্রমন কারী টিমেরএকজন দর্শনার্থী।সকলের এই যখন অবস্থা তখন জীবন বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে কল দেন পিয়াস সরকার। পরে নাটোর জেলা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে চলনবিলে পথ হারানো ওই ভ্রমন কারী দলকে রাতভর অভিযান চালিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্র নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, নওগার আত্রাই উপজেলা থেকে গত ২৬ আগস্ট নৌকা যোগে চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ ও নাটোরের গুরুদাসপুরের বিলসা বিল ভ্রমনে আসেন ৫জন শিশু ও ১২জন নারীসহ ৪০ জনের একটি ভ্রমন বিলাসী দল। বিলশা বিল বেড়ানো শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলস্থ তিশিখালী মাজারে আসেন তারা। সেখান থেকে রাত ১০টার দিকে আত্রাইয়ের পথে রওনা হওয়ার ৩ঘন্টা পরে দলটি বুঝতে পারে তারা পথ হারিয়ে ফেলেছে। এসময় তারা রাতের ঘন অন্ধকারে কোন ভাবেই নিজেদের অবস্থান চিহ্নিত করতে পারছিলনা। এদিকে সারাদেশে আবহাওয়ার ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি থাকায় এবং চলনবিলের ভয়ানক অবস্থা দেখে তার াজীবন বাচানোর ভয়ানক চিন্তায় পড়ে যায়। এসময় পিয়াস সরকার নামে ওই ভ্রমনকারী দলেরএকজন ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পথ হারিয়ে ৪০জনের জীবন সংকটা পন্ন মর্মে অবহিত করে সাহায্য চায়। পরে ৯৯৯ নম্বর থেকে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমারকে জানান। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে সিংড়া ও গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ৫টি টিম ৪০ জনের ওই টিমকে উদ্ধারাভিযানে নামে। পরে আধুনিক প্রযুক্তি ও এলআইসি, ঢাকার সহায়তায় প্রথমে সিংড়ার বিলদহর এবং পরে গুরুদাসপুরের যোগেন্দ্রনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পথ হারানো ৪০জনের অভিযাত্রিক দলকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়ে আত্রাইয়ের সীমানা পর্যন্ত রেখে আসে পুলিশ। পিয়াস সরকার এজন্য নাটোরের পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানান।