লক্ষ্মীপুরে মিলেনিয়াম হাসপাতাল প্রা: লি: কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রোগীকে ভুল অস্ত্রোপাচারের অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রোপাচারকালে রোগীর ডান হাতের পিঠে অংশে টিউমার আছে মর্মে জানানো হয়। অস্ত্রপাচার শেষে রোগীর পিঠে কোনো ধরনের টিউমার মিলেনি বলে স্বজনদের জানান সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা: নুর আলম মহিম। এসময় রোগীকে অন্য রোগ বলে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে অস্ত্রোপাচারকারী ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তবে টেস্ট রিপোর্ট এর ভিত্তিতে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে বলে টেষ্ট রিপোর্ট ভুল বলেও দাবী করেছেন সার্জন ডা: নুর আলম মহিম। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট। ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী এরশাদ গণমাধ্যমে এসব অভিযোগ করেন। এর আগে ২৩ আগস্ট রবিবার ভূক্তভোগী মো: এরশাদ এর বড় ভাই জসিম উদ্দিন ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে ডাঃ নুর আলম মহিম, মিলেনিয়াম হসপিটাল, আল-আমিন প্যাথলজী এন্ড কনসালেটেশন সেন্টার ও আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস লিঃ কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২১ আগস্ট শুক্রবার মো: এরশাদ (২৫) অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লক্ষ্মীপুর মিলেনিয়াম হসপিটাল (প্রা: লি:) নেওয়া হয়। সেখানে ডা: নুর আলম মহিম পরীক্ষা শেষে বলেন তার ডান হাতের পিঠে (বাহু) অংশে চর্বি টিউমার হয়েছে। উক্ত রোগের জন্য দ্রুত অপারেশন করতে হবে। তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেন। রাত ৮টায় ডাক্তার এরশাদের অপারেশন করেন। অপারেশনের পরে ডাক্তার বলেন, যে রোগের কারণে অপারেশন করা হয়েছে সে মূলত ওই রোগে আক্রান্ত নয় তার হাড় টিউমার হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। ভূক্তভোগীর মা বলেন, আমার ছেলেকে ভুল অপারেশন করে সুস্থের বদলে আরো অসুস্থ করে ফেলছে। টিউমার আছে বলে শরীর কেটে আরো ক্ষতি করে ফেলছে। তবে এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ইব্রাহীম বলেন, এটি ডাক্তারের বিষয়। ডাক্তারের নির্দেশেই আমাদের হাসপাতালে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে। ভুল চিকিৎসা কিনা তা ডাক্তার জবাব দিবে। এটার দায়ভার আমাদের নয়। ডাক্তার নুর আলম মহিম অস্ত্রোপাচারের বিষয়ে কোন লিখিত অনুমতি বা প্রেসক্রাইব করছে কিনা তা জানতে চাইলে হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার বাহারুল ইসলাম বলেন, সার্জারি ডাক্তার নুর আলম মহিম স্যারের মৌখিক নির্দেশে (লাইপোমা) আছে মর্মে অস্ত্রোপাচারের ব্যবস্থা করা হয়। অভিযুক্ত ডা: নুর আলম মহিম বলেন, রিপোর্ট এর ভিত্তিতে আমি অস্ত্রোপাচার করেছি। এখানে টেস্ট এর রিপোর্ট ভুল ছিল। আমার অস্ত্রোপাচারে কোন ভুল ছিলনা। টেস্ট রিপোর্ট দেওয়া প্রতিষ্ঠান আল আমিন প্যাথলজীর স্বত্বাধিকারী মো: শাহাদাত হোসেন বলেন, ডাক্তারের হাতে নেওয়া টেষ্ট স্যাম্পল আমরা ঢাকায় প্রেরণ করি। ঢাকা আনোয়ারা মেডিক্যাল সার্ভিসেস থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট রোগীকে দিয়েছি। কোন ভুল থাকলে তার দায় আনোয়ারা মেডিকেল এর হবে। আমাদের কোন দায় নেই। লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা: আব্দুল গাফফার বলেন, অভিযোগ পত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।