ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে খোলা আকাশের নিচে স্তূপ করে রাখা হয় আবর্জনা। সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে হাসপাতালের ব্যবহৃত জীবাণুযুক্ত তুলা, ব্যান্ডেজ ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষুধ পচেগলে মিশে যাচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে নোংরা পানি। এতে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি আর অসচেতনতা এর জন্য দায়ী । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েক মাস ধরে স্থানীয় পৌরসভা নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ না করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক ফুট দূরে বর্জ্যরে স্তূপ । ভবনের উত্তর পাশে নার্সিং ইনস্টিটিউট। এর মাঝখানে প্রতিদিন ফেলা হয়, চিকিৎসা বর্জ্য। বর্জ্যরে মধ্যে রয়েছে, ব্যবহৃত সুই, সিরিঞ্জ, তুলা, অব্যবহৃত ঔষুধ ও রোগীদের রক্ত, গজ-ব্যান্ডেজ। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি লিমন হোসেন নামে এক রোগীর অভিভাবক বলেন, খোলা জায়গায় ফেলে রাখা এসব চিকিৎসা বর্জ্য অনেক ক্ষতিকর। আমরা যারা রোগীর সঙ্গে থাকি তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে । নার্সিং ইনস্টিটিউটের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বর্জ্যরে দুর্গন্ধে তারা ক্লাস করতে পারেন না। ক্যান্টিনে খেতে গেলে গন্ধে বমি আসে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, পশ্চিম দিকে একটি ইনসাইনেরেটর (চিকিৎসা বর্জ্য বিনষ্ট করার চুল্লি) রয়েছে। ঐ স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘদিন তা নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। ঠাকুরগাঁও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিলেও তাদের কর্মকান্ড চলছে দায়সারাভাবে । পৌর কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগেও নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ করত । এক মাসের বেশি সময় ধরে পৌরসভার গাড়ি নিয়মিত বর্জ্য নিতে না আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুজ্জামান বলেন, যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে তা অপসারণ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে । টয়লেটের স্লাবের ওপর ময়লা ফেলা হয়। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের বর্জ্যরে শৃঙ্খলা আনতে আধুনিক ও ধোঁয়াবিহীন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হচ্ছে । ধোঁয়াবিহীন এ চুল্লিতে মুহূর্তে ছাই হয়ে যাবে যে কোনো সংক্রামক বর্জ্য। এতে হাসপাতালে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে দাবি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের ।