প্রফেসর ইউনুসের সাথে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক। তার বন্ধু দুটি দলের মধ্যেই আছে। সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর। ড. ইউনুস একজন গ্লোবাল লিডার। তাই মার্কিন নিবার্চনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে—ই জয়ী হোক না কেন আমাদের সম্পর্কের কোন চ্যালেঞ্জ হবে না। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো। আমরা চাচ্ছি তাদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তাতে আমরা সারা বিশ্বের সাপোর্ট পেয়েছি। পতিত স্বৈরাচার সরকারের সাথে ইন্ডিয়া থাকা সত্বেও তাতে কোন কাজে আসেনি। জনগণ জেগে উঠলে কোন অপশক্তিই টিকে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ ডোমেস্টিক পলিটিক্যাল ইস্যু। লবিস্টরা হয়তো এ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলাদেশে কোন সংখ্যালঘু নিযার্তন হয়নি। বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিল নয় জন সংখ্যালঘু মারা যাওয়ার বিষয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় এখানে রিলিজিয়াস মোটিভিশনের চাইতে পলিটিক্যাল অ্যাফিলিয়েশন বা অন্য কোন কারণ ছিল।
আজ (০২ নভেম্বর, ২০২৪ শনিবার) রাজধানীর এফডিসিতে মার্কিন নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নিবার্চনের আগ মুহুর্তে এক টুইটারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করায় পতিত সরকার মনে করছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের ফিরে আসা সহজ হবে। ট্রাম্প নির্বাচিত হলে তার সাথে মোদীর সম্পর্ককে পঁুজি করে তারা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত পতিত স্বৈরাচারকে এ দেশের ছাত্র জনতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর গ্রহণ করবে না। মার্কিন নির্বাচনের কয়েক দিন পূর্বে গত পরশু হঠাৎ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সংঘ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দার বিষয়ে কেউ কেউ রহস্য খেঁাজার চেষ্টা করছে। আসলে এটি ট্রাম্পের ভোটের রাজনীতির কৌশল। যেহেতু কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশদ্ভেুাত। আমেরিকায় অবস্থানরত ভারতীয়রা বেশিরভাগই কমলাকে সমর্থন দেয়ায় ট্রাম্প ভারতীয়দের হিন্দুদের সিম্প্যাথি পাবার জন্য এই ধরণের মন্তব্য করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মার্কিন নির্বাচনে যেই বিজয়ী হোক না কেন তাদের পররাষ্ট্রনীতি খুব একটা বেশি পরিবর্তন হয়না। এছাড়া বর্তমান অন্তর্বতীর্সরকার প্রধান ড. ইউনুস সারা বিশ্বে একজন জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলেও বর্তমান সরকারের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক আরো মর্যাদা ভিত্তিক হবে। অন্যদিকে কমলা হ্যারিস ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন আমাদের সম্পর্কের কোন ব্যাঘাত ঘটবে না।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “আগামী মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে না” শীর্ষক ছায়া সংসদে গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, প্রফেসর ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হাসিব, সাংবাদিক আশিকুর রহমান অপু ও সাংবাদিক মো: আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।