বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষনকারী আবু মুছা ওরফে কিলার মুছার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম যুবদল নেতা আব্দুল লতিফ হত্যা মামলায় সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে মুছাকে আদালতে হাজির করলে দুপক্ষের শুনানী শেষে সিরাজগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ রাসেল মাহমুদ পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সদর থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে, মুছার ফাঁসির দাবীতে ছাত্র-জনতা কোর্ট চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মুছাকে বহনকারী গাড়ী লক্ষ্য করে ডিম ছুড়েছে। এর আগে র্যাব-১২ ও ১৫ শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের কলাতলী বিচ এলাকা থেকে মুছাকে আটক করেন। আবু মুছা সিরাজগঞ্জ শহরের দত্তবাড়ী মহল্লার মৃত ছানোয়ার হোসেনের ছেলে। আবু মুছা সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী প্রধান ক্যাডার হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। তাকে সিরাজগঞ্জবাসী কিলার মুছা নামে ডাকে। বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. আব্দুর রফিক ও নাজমুল ইসলাম জানান, ৪ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে শহরের প্রধান সড়ক এস.এস রোডে আবু মুছা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে নিরীহ ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষন করেছে। যার ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। শুধু মুছা নয় ছাত্র-যুবলীগ অনেকেই দেশী-বিদেশী অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালিয়েছে। তাদের গুলিতে এবং অস্ত্রের আঘাতে ৩জন ছাত্রদল ও যুবদল নেতা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। তারা জানান, হত্যার ঘটনায় থানায় দায়ের করা তিনটি মামলার মধ্যে কিলার মুছাকে লতিফ হত্যা মামলা আদালতে হাজির করা হয়। আদালত দুপক্ষের শুনানী শেষে ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। আশা করছি- পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মুছার ব্যবহৃত অস্ত্র কোথা থেকে আসল এবং আর কারা হত্যার সাথে জড়িত সে তথ্য বের করে হত্যা মামলাগুলোর সুবিচার করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ৪ অগাস্ট আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ শহরে গুলি করে এবং কুপিয়ে যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। ওই সব ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মুছা প্রতিটি মামলারই এজাহারভুক্ত আসামী। তাকে যুবদল নেতা লতিফ হত্যা মামলায় ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তাকে আদালত থেকে সরাসরি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।