গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা মামলার আসামির কারা হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এলাহী শিকদার (১৯) নামের ওই আসামিকে মৃত ঘোষণা করেন। দৈনিক নবচেতনাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার আল মামুন ও গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জ্বীবিতেষ বিশ্বাস। এলাহী শিকদার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়নের ফলসি গ্রামের মুহি শিকদারের ছেলে। তিনি ফলসি বাজারে হোটেল ব্যবসা করতেন। জেল সুপার জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে এলাহী শিকদার (১৯) নামের কয়েদি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি আরো বলেন, গত ৪ তারিখে আদালত থেকে এলাহী শিকদারকে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে আসার আগে থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এলাহী। আমরা তাকে ওইদিনই সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। কিছুটা সুস্থ হলে তাকে সেদিনই কারাগারে নিয়ে আসা হয়। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জ্বীবিতেষ বিশ্বাস জানান, রাত একটার দিকে ওই আসামিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত চলছে। রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ বলতে পারবো। মৃত এলাহীর পরিবারের কয়েকজন সদস্য হাসপাতালে বসে নবচেতনাকে জানান, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সেনাবাহিনীর ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার হন এলাহী। পরদিন কোর্টের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ওইদিন কিছুটা অসুস্থ ছিলেন এলাহী। গতরাতে তার বাবাকে ফোন দিয়ে এলাহীর অসুস্থতার কথা জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে বাড়ি থেকে সবাই হাসপাতালে রওনা হলে পথে খবর পাই এলাহী মারা গেছে। এখন মরদেহের পোস্টমর্টেম চলছে। আমরা মৃতদেহ বুঝে নেওয়ার জন্য এসেছি। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিচুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের থানায় এলাহীকে পাঠায়। পরদিন বুধবার আমরা তাকে আদালতে পাঠাই। উল্লেখ্য, গত ৫আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ত্যাগের পর ১০আগস্ট গোপালগঞ্জের গোপিনাথপুরে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিল থেকে সেনাবাহিনীর টহল টিমের ওপর হামলা হয়। এসময় সেনার গাড়িতে আগুন ও অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনার ১২ দিনপর গত ২৩ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ১০৬ জনকে সুনির্দিষ্ট ভাবে আসামি করে আরো ৩হাজার ২০০জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এই মামলার আসামিদের ধরতে কয়েকদিন যাবৎ গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর ধরপাকড় অভিযান চলছে।