পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন ও সংস্কার প্রকল্পের বাস্তবায়নে দীর্ঘ ৫৯ বছর পর কাটাখালি খনন করা হয়। সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কাটাখালি খনন করলেও ময়লা ফেলার ডাস্টবিনের অভাবে আবারও দূষিত হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টায় ২০২০ সালে কাটাখালিতে প্রবেশ করে যমুনার পানি এর ফলে এ খালের দুই পাড়ের সব ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে চলে যাচ্ছে। এতে স্বস্তি মিললেও আবারও অবৈধভাবে খালের মুখ আটকিয়ে মাছ চাষ হচ্ছে, সেই সাথে কাটাখালির পাড়ে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর ময়লা ফেলার ডাস্টবিন না থাকায় ময়লা ফেলা হয় খালে ,এ কারণে কাটাখালি পরিনত হচ্ছে ডাস্টবিনে। জানা যায়, দেশের ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে কাটাখালি খনন শুরু হয়। সদর উপজেলার বাঐতারা থেকে শহরের মিরপুর হয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের পাশ দিয়ে বাহিরগোলা ও চন্দ্রকোণা হয়ে ইছামতি নদী নদীতে এটি মিলিত হয়েছে। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার এ খালটির খননকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বাঐতারা স্লুইচ গেট খুলে দিয়ে যমুনার পানি প্রবেশ করানো হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন পর স্বস্তি পায় সিরাজগঞ্জবাসী। ডাস্টবিনের বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৩নং কাউন্সিলর রিয়াদ রহমান জানান, কাটাখালি কিছু অংশ আমার ওয়ার্ডের মধ্যে। কাটাখালি পাড়ের রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে মায়লা সংগ্রহ সম্ভব না, তাই ডাস্টবিন স্থাপন সম্ভব না। আমরা জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করছি , এখন আইন প্রয়োগ করা ছাড়া দূষণ রোধ সম্ভব না। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কাটাখালির বাঐতরা চ্যানেল দিয়ে যমুনার পানি প্রবেশ করেছে। আমরা কাটাখালির যৌবন ফিরিয়ে দিতে কাজ করছি। শহরবাসীকে সচেতন থাকতে হবে কোনোভাবেই যেন এতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা না হয়। কিন্তু খালে আবর্জনা ফেলা রোধ করা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য যে, সিরাজগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদী যা কাটাখাল নামে পরিচিত। বৃটিশ সরকারের আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে এ খালটি খনন করে যমুনা নদীর সঙ্গে সংযোগ করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করার ফলে খালটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। কাটাখালির পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয় শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এ খালটি। এর মধ্যে দফায় দফায় কাটাখালি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটা আলোর মুখ দেখেনি। সিরাজগঞ্জের কৃতি সন্তান সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের নিদের্শে ২০১৯ সালে খাল ও জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বিভাগ কাটাখালি পুনর্খনন কাজ শুরু করে।