সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মাঠ থেকে নতুন আলু তোলা শুরু হয়েছে । জমিতেই বীজ আলু বাছাই করে আলাদা রাখছেন কৃষক । আর বড় ও মাঝারি আলু জমি থেকেই আলু ব্যবসায়ীরা প্রতি মন ১৪০০ টাকা দরে ক্রয় করছে । জমি থেকে আলু ক্রয় করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে তারা প্রতি মন আলু ১৫২০ টাকা দরে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করছে । এবার আলুর উৎপাদন বেশী ও ভালো দাম পাওয়ায় বেজায় খুশি কৃষক । উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ভাটবেড়া, সাতবিলা,মাহমুদপুর এলাকার বিভিন্ন মাঠ ভরে আলুর আবাদ করছেন কৃষকেরা । মাঠ থেকে আলু তুলে বিক্রি করে চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধান লাগানো শ্রমিকদের মজুরি ও সারের দাম মেটাচ্ছে । উপজেলার মহোনপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর , ভাটবেড়া মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কৃষকেরা জমি থেকে আলু তুলছেন এবং জমি থেকেই ব্যবসায়ীদের কাছে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন। কৃষক মোতালেব আকন্দ জানান, নিজের তিন বিঘা জমিতে শাপলা জাতের আলু আবাদ করেছেন। প্রতি ডেসিমালে দেড় থেকে দু’মণ হারে আলু উৎপাদন হয়েছে । তিনি মোহনপুর বাজারে নিজ আবাদের দু’মণ আলু ১ হাজার ৪৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন । নতুন আলু বাজারে আসার পরও উল্লাপাড়ার হাট-বাজার এখনো ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু । কৃষক মোতালেব আকন্দ আরো বলেন, তিনি সহ গ্রামের আলু চাষি কৃষকগণ জমি থেকে তোলা আলু বাছাই করে বীজ আলু বাড়িতেই সংরক্ষণ করছেন । আর বড় ও মাঝারি আলু বোরো ধান লাগানোর খরচ মিটানোর জন্য বিক্রি করতে হচ্ছে । বাড়িতে রাখা বীজ আলু দের মাস পর উল্লাপাড়ায় হিমাগার না থাকায় আগামী ফালগুন মাসে ওই বীজ আলু বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন হিমাগারে রাখা হবে। মাহমুদপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে তিন থাকে প্রায় ২৪০ মন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন “কন্দাল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় দশীয় পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণাগার” নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। কৃষক আফজাল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম মাঠ থেকে তোলা আলু বাছাই করে বীজ আলু ওই সংরক্ষণাগারে রাখছেন । এই সংরক্ষণাগার থেকে এক বছর পর ওই বীজ আলু নিজ জমিতে বোনবেন এবং বাকী বীজ আলু বিক্রয় করবেন বলে জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সূবর্ণা ইয়াসমিন সূমী বলেন, চলতি মৌসুমে ৯৯৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো । লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এবার আরও অতিরিক্ত ১০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ বেশী হয়েছে । মোট ১০০৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৬ শত মেট্রিকটন । গত বছরের তুলনায় এবার আলুর উৎপাদন ভালো হয়েছে । তিনি আরো জানান, আগামী বছর আরো বেশী করে ওই এলাকায় আলুর আবাদ করার লক্ষ্যে বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলার মহোনপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেনের বাড়িতে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কন্দাল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় দশীয় পদ্ধতিতে তিন থাকে প্রায় ২৪০ মন আলু ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বীজ আলু সংরক্ষণাগার নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।