নার্সারি ভিলেজ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে সিরাজগঞ্জের শিবনাথপুর গ্রামটি। গ্রামটিতে ছোট বড় মিলে প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশি নার্সারি রয়েছে। নার্সারি ব্যবসা করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। বিভিন্ন ফলদ, বনজ ও গাছের পাশাপাশি প্রতিটি মৌসুমেই ফুলের চাষ হয়ে থাকে এসব নার্সারিতে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এক সময় প্রতাপশালী জমিদারের গ্রাম ছিল সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের শিবনাথপুর। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর দারিদ্র্যের মধ্যে দিন পার করছিলেন এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। প্রায় তিন যুগ আগে গ্রামটিতে নার্সারি করার উদ্যোগ নেন নাসির উদ্দিন, আব্দুল মান্নান ও আব্দুল হালিম। বিভিন্ন মৌসুমে গাছের চারা উৎপাদনের পাশাপাশি ফুল চাষ শুরু করেন তারা। আর এভাবে বদলে যেতে থাকে তাদের জীবন। তাদের দেখাদেখি অনেকেই এখন এই নার্সারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছেন। সাধারণত অক্টোবর মাসের প্রথমদিকে চাষিরা দেশি গোলাপ, বিদেশি গোলাপ, চাইনিজ গাঁদা, হাইব্রিড গাঁদা, দেশি গাঁদা, বর্ষালী গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, জবা, গেইটফুল, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুলগাছের চাষ শুরু করেন। ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এসব ফুলগাছ বিক্রি হয়। এই ফুলগাছের চারা সিরাজগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন। নার্সারি থেকে ফুল কিনতে আসা পুরানো ফুল ব্যবসায়ী হান্নান সরকার বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে ফুলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ এলাকায় অনেক নার্সারি রয়েছে এসব নার্সারি থেকে ফুলের চারা পাইকারি দামে কিনে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকি। প্রতিটি ফুলের চারা বিভিন্ন দামে বিক্রি করি। কোনোটা বিশ টাকা, আবার কোনোটা ফুলগাছের চারা পঞ্চাশ টাকাও বিক্রি করে থাকি।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, ফুল চাষ ও নার্সারি ব্যবসায় কৃষকরা যেন লাভবান হতে পারেন এ জন্য প্রযুক্তিগত তথ্য, সঠিক পরিকল্পনা, দিক নির্দেশনা দিয়ে সহয়তা করা হয়। এ ছাড়াও ফুলের চাহিদা বাড়ায় কৃষকদের ফুল চাষে উদ্বদ্ধ করা হচ্ছে।