সিলেটে তাকে বলা হয় ২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বালাগঞ্জ- বিশ্বনাথ আসনের সাবেক সাংসদ সফিকুর রহৃান চৌধুরী।তাঁকে বলা হয় দলীয় প্রধানের অগ্নি পরীক্ষায় বার বার উত্তীর্ণ ২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ।যেখানে যেকোনো সময় সন্ধ্যা হোক কিংবা দ্বিপ্রহর, ভোর কিংবা দুপুর রাজনীতির প্রয়োজনে তিনি হাজির। গত দুই টার্ম শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ২০১৪ সালে এবং ২০১৮ সালে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়। বহু বছর আসনটি বিএনপির দখল থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন সফিকুর রহমান চৌধুরী। দুই দুইবার দলের স্বার্থে দলীয় নেত্রীর নির্দেশে আসনটি ছেড়ে দিয়ে দুবার অগ্নিপরীক্ষায় জয়ী হলেও তৃতীয় পরীক্ষায় ভাগ্যে কি আছে জানতে খুব বেশি দিন হয়তো। অপেক্ষা করতে হবেনা। তবে এবার তিনি খুব আশাবাদী বলে মনে হচ্ছে দুবারের পুরষ্কারটি দলনেত্রী নিজ হাতেই তাকে তোলে দেবেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শফিকুর রহমান চৌধুরীর গলার কাটা শরিক দল জাতীয় পার্টি। আসন ভাগাভাগিতে ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা সংশয়ে রয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরীর । তবে, তার পক্ষে এবার আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা তাকে এবার এমপি চাইছেন। সঙ্গে আছেন সিলেট-৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদসহ নবীন প্রবীন নেতারা। ব্যালটে নৌকার প্রার্থী ফেরাতে এবার ওই এলাকার সাধারণ মানুষও আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় প্রার্থীর দাবি তুলেছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে সভা করে দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদও। সম্প্রতি জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরবাসী সভা করেছে। সভায় দুই উপজেলার কয়েকশ’ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও। বক্তৃতাকালে তিনি শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রতিযোগিতার বিষয়টি তোলেন। এখন সেই প্রতিযোগিতার নেই, আমাদের মধ্যে আন্তরিকতার সম্পর্ক বিদ্যমাম। মেয়র আনোয়ার বলেন, সিলেট-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আমার প্রতিযোগিতা ছিল। এখন নেই রাজনীতিতে এগুলো স্বাভাবিক, আমি যেহেতু সিলেটের মেয়র নির্বাচিত হয়েছি ফলে এ আসনে শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আমার সেই প্রতিযোগিতা কিংবা দূরত্ব নেই। এখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, শফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচিত এমপি হয়েও দলের স্বার্থে বিগত দুই টার্ম শরিক দলকে ছাড় দিয়েছেন। জীবনের শেষ বয়সে এখন তার প্রাপ্তির পালা। এ ছাড়া দুই টার্ম নৌকার প্রার্থী না থাকায় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষও হতাশ। সুতরাং আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি তুললে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারেন। আমরা সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেবো। শফিক চৌধুরীকে এ আসনে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষে মাঠে থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে, শফিকুর রহমান চৌধুরী সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন, সত্যিকার অর্থে সিলেট-২ আসনটি উন্নয়নে পিছিয়ে যাচ্ছে। জনগণ এতে বঞ্চিত হচ্ছে। আশা করি এবার এ আসনের জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর সুনজর থাকবে। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। বলেন, শফিকুর রহমান চৌধুরী আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্তঃপ্রাণ। প্রধানমন্ত্রী তাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার আস্থার প্রতিদান দিয়ে তিনি সিলেট-২ আসন পুনরুদ্ধার করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি এই আসনে বিপুল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ করেন। গেল দুইবার তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ না পেলেও কখনো এই আসনের জনগণকে ভুলে যাননি। সুখে-দুঃখে সবসময় বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরবাসীর পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। মহানগর সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন সফিকুর রহমান চৌধুরী একজন ত্যাগী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরীক্ষিত সৈনিক। সফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন দলের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই সেটা রাত না দিন আমার কাছে মুখ্য নয়।