বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ব্যাহত করতে নতুন ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আটকে ধরার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। আমাদেরকে ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, দেশ অন্ধকারে পতিত হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরি সার্ভিস এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে এক কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিতে হতো। এখন সে অবস্থা নেই। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। আগামীতে পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়ার আশা ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান না কেন সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানরা থমকে যায়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে আমেরিকা, পশ্চিমারা বাংলাদেশকে সমীহ করে। কারণ আমাদের নেতৃত্বের নাম শেখ হাসিনা। একজন মানুষ তার সঠিক নেতৃত্বে বদলে দিতে পারে। আমাদের স্বপ্ন এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাব।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দ্বীপজেলা ভোলাবাসীর জন্য আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরি চালু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলীয় মানুষের জন্য সবসময় চিন্তা করেন। তাদেরকে মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভোলা জেলায় অনেক কিছুই আছে। তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাটা দুর্বল। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য।
চলাচল ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে ভোলার মানুষ যেখানে রাতে মানুষ লঞ্চে চলাচল করত, এখন দিনের বেলায় মানুষ লঞ্চে চলাচল করে। আমরা প্রথম দিনের বেলা লঞ্চ সার্ভিস চালু করেছি। জনগণ উপকার পাচ্ছে। আজকে আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরির উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রীর বৃহত্তর আঙ্গিকের কথা চিন্তা করেন। রাঙ্গাবালী চরমোনতাজ থেকে ঢাকা লঞ্চ চালু করেছেন। সন্ধীপে যেটি তৈরি করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ হাতিয়া, সন্ধীপ রুটে চালু করেছেন। যাত্রী পারাপারে ভূমিকা রাখছে। হাতিয়া, সন্ধীপ, কুতুবদিয়া, টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত নৌ যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে। দুর্ভোগ শূণ্যতে চলে আসবে।
উপকূলীয় অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নমূলক কাজ চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের উপকূলীয় ও অনুন্নত এলাকায় মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করা হচ্ছে। যানবাহনসহ যাত্রী পারাপার ফেরি সার্ভিস পৃথিবীর অনেক দেশে আছে। আমাদের দেশে এটি নতুন। এটা আমাদের গর্বের। আমরা ফেরি সার্ভিসে আন্তর্জাতিক মানের অংশ হয়ে গেলাম। আমাদের দেশে জাহাজ তৈরি হচ্ছে, ড্রেজার তৈরি হচ্ছে, যুদ্ধজাহাজ তৈরি হচ্ছে। আমরা এক সময় উড়োজাহাজ তৈরি করব। মেরিটাইম সেক্টরে সেক্টরে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মতিউর রহমান, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল হোসেন , কার্ণিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ‘এবার যাব বাড়ি, সঙ্গে যাবে গাড়ি’- এ স্লোগানকে ধারণ করে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে ঢাকা-ভোলা রুটে যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরির যাত্রা। আজ ঢাকার কেরানীগঞ্জস্থ হাসনাবাদে যাত্রীবাহী এ রো রো ফেরীর যাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ‘কার্নিভাল ক্রুজ’ ও ‘কার্নিভাল ওয়েব’ এ দুটি রো রো ফেরী নিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা ভোলা (ইলিশা রুটে) জাহাজ দুটি চলাচল করবে।
নতুন এ জাহাজটির পরিচালনায় রয়েছে কার্ণিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেড।
কার্নিভাল ক্রুজ লাইনের পরিচালক মাসুম খান জানান, যানবাহনসহ যাত্রীবাহী দুটি রো রো ফেরি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-ভোলা (ইলিশা) রুটে চলাচল করবে। ঢাকা কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল আটটায় ছেড়ে যাবে। ভোলার ইলিশা ঘাটে দুপুর ২টায় পৌঁছবে। ইলিশা থেকে রাত নয়টায় ছাড়বে। ফেরিতে সিট ক্যাপাসিটি রয়েছে ৩৩০ জনের। এর মধ্যে কেবিন ৬০টি, চেয়ার ১০০টি। ৩৫টি গাড়ির ধারণ ক্ষমতা