কুড়িগ্রামের রৌমারীতে গত কয়েকদিন থেকে বন্যার পানি কমে ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনে বশতবাড়ি বিলিন হচ্ছে। উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় এক সপ্তাহে প্রায় ২০টি বশতবাড়ি ও কৃষি জমি নদের গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়েছে প্রায় ৩০ পরিবার। স্থানীয়রা জানায়, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো বর্তমানে অন্য কোনো এলাকায় স্থান না পেয়ে নদের তীরে ছাপড়া ঘর উঠিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবন যাপন করছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় সরকারি, বেসরকারি এনজিও সহ কোনো জনপ্রতিনিধিদের পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ও চরগেন্দার আলগা, রৌমারী উপজেলার শেখের বাজার, খেদাইমারী, চর খেদাইমারী, ফলুয়ার চর, পালেরচর, কান্দাপাড়া, দিঘলাপাড়া ও ধনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে একইভাবে বসতবাড়ি ও কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। একই উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী ও চর গেন্দার আলগা গ্রামেরও একই অবস্থা। ঘুঘুমারী গ্রামের আকবর আলী বলেন, কয়েকদিনের মাথায় আমার বাড়িটি নদীতে ভেঙে যায়। কৃষি জমি যা ছিল সব নদীতে গেছে। আমি সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। এর আগেও নদীতে তিনবার বাড়ি ভেঙেছে। আমরা রিলিফ চাই না সরকার যদি নদী ভাঙনরোধ করে দেয় তাও কোনো মতো বাঁচতে পারবো। সুখেরবাতি গ্রামের সকিনা খাতুন বলেন, আমার ঘরবাড়ি ও গাছপালা সব নদতে ভেঙে গেছে। নিজের জায়গা না থাকায় নদের পাশেই ছাপড়া তুলে কোনো মতো ঠাঁই করে আছি। সরকারের কাছে দাবি নদটা যেন বানদি দেয়। চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এখনই নদী ভাঙন রোধকরা না হলে ঘুঘুমারী ও সুখেরবাতি গ্রামটি সম্পন্ন নদীতে বিলিন হয়ে যাবে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নদে বিলিন হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ওই পরিবারগুলো আত্মীয় স্বজন ও নদের পাশেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তাদের পুনর্বাসন করা জরুরি। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্দবেড় ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন রোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তবে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী খেয়াঘাট, চরগেন্দার আলগা এলাকায় ভাঙনরোধের কোনো প্রকল্প নেই। চলমান প্রকল্পে যুক্ত করে আগামীতে বাস্তবায়ন করা হবে। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, এর আগেও আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য কিছু সহযোগিতা করা হয়েছিল। এ বিষয়ে নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।