দুই হাজার স্কয়ারফিট লোহার একটি লম্বা ঘরের ভেতরে সারি সারি বিউটি টমেটো গাছ। আর কয়েক দিন পর ফল ধরবে। দুইজন কর্মী গাছগুলো পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছে। নেই কোনও মাটির চিহ্ন। মাটি ছাড়া কেবল পানিতে জন্মাচ্ছে এই সবজি গাছ। পানির পাশাপাশি সারিতে নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়োতে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে কোকোপিট দিয়ে চাষ হচ্ছে বিউটি টমেটো। এভাবেই সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের শাহানগাছা এলাকায় ফার্মডেক্স এগ্রোতে উন্নত জাতের বিউটি টমেটো চাষ হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে জাহিদুল ইসলাম মিলন (৩৫) নামের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এক একর জমিতে গড়ে তুলেন এই ফার্মডেক্স এগ্রো। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় চলতি মৌসুমে দুই হাজার স্কয়ার ফিট গ্রিন হাউজের মধ্যে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে থাইল্যান্ডের হানিডিউ তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় প্রচেষ্টা চলছে বিউটি টমেটো চাষ। এই প্রচেষ্টাও সফলের আশা করছেন তিনি। মাটিবিহীন এই পদ্ধতি এখন মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতিদিন আসছে মানুষ পরামর্শ নিতে। এ পদ্ধতিতে বাড়ির বারান্দা, ছাদ, উঠানে প্লাস্টিকের পট বা পলি টানেলে অধিক শস্য চাষ করে পারিবারিক চাহিদার অনেকাংশই পূরণ করা সম্ভব হবে। সিরাজগঞ্জে ফার্মডেক্স এগ্রোর পরিচালক তরুণ উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, শিক্ষা জীবন থেকেই কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন। মেরিন ইন্সটিটিউট থেকে ২০০১ সালে আইএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পাশ করে চাকরি না করে নিজেই উদ্যোক্তা হয়েছি। দুই হাজার স্কয়ারফিট গ্রিন হাউজে ৬৪০টি বিউটি টমেটো চারা লাগালো হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৬৪০টি গাছ থেকে সপ্তাহে ৩শ’ কেজি টমেটো পাবো। তাতে খচর শেষে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে। দেড় মাস হলো টমেটোর চারা লাগানো হয়েছে। ১০-১২ দিনের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করবে। বর্তমানে গাছে ফুল এসেছে তাই পরিচর্চা চলছে। তিনি আরও বলেন, অনেকে এই ধরনের প্রকল্প করতে আগ্রহীও হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে সরকার ইতিমধ্যেই চার শতাংশ হারে ঋণের ঘোষণা দিয়েছে। এই ধরনের ফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ কৃষির আওতায় আনাসহ আমদানি করা পণ্যের ভ্যাট কমানোর জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চান এই তরুণ উদ্যোক্তা। এই ফার্মডেক্স এগ্রোতে লাউ, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, খিরা, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, গাঁদা, গোলাপ ও অর্কিডসহ নানা ধরনের ফসল আগামীতে উৎপাদন হবে বলে তিনি জানান।