লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আল ফারুক নামের একটি প্রাইভেট হসপিটালের গাফিলতি ও চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় নাজমা খাতুন নামের (৩৫) এক প্রসূতি ও নবজাতক কন্যা শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের দাবি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে তাদের মৃত্য হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে মৃতের স্বজনরা হসপিটাল ঘেরাও করে চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির শাস্তি দাবী করেন। নাজমা খাতুন রামগঞ্জ পৌর জগৎপুর গ্রামের কোয়াজি বাড়ীর প্রবাসী আসাদ উল্যার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী। নাজমা খাতুনের বড় মেয়ে সায়মা আক্তার জানান, গত ৩০ জুন তার মা নাজমা খাতুন রামগঞ্জ আল ফারুক হসপিটালের চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতে আসেন। এসময় তিনি চিকিৎসককে তার স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসক ন্যান্সি ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যথা কমিয়ে দেয়ার পর শারিরীক সমস্যা আরো বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ২ তারিখে তীব্র ব্যথা নিয়ে আবারও হসপিটালে আসলে ঐ চিকিৎসক তাকে দ্বিতীয়বারের মতো ইঞ্জেকশন দিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন। তিন তারিখেও আমার মা হসপিটালে আসলে চিকিৎসক জানান, কোন সমস্যা নাই। পরদিন থেকে গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া না হওয়ায় আমরা চতুর্থবারের মতো আমার মা’কে হসপিটালে আনলে চিকিৎসক জানান, বাচ্চার হার্টবিট নেই-বাচ্চা গর্ভে মারা গেছে। দ্রুত সিজার করিয়ে আমার মায়ের শারিরীক অবস্থা বেশি ভালো না বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। উপায়ন্তর না দেখে আমার মা’কে ঢাকার আদ্ব-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক জানান, নাজমা খাতুন ভুল চিকিৎসকের শিকার হয়েছেন। প্রায় ১২/১৩ দিন আমার মা’কে সেখানে চিকিৎসা করিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করলেও আমার মাকে বাঁচাতে পারিনি। আমরা উক্ত চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করছি। এখন তারা আমাদের টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। নাজমা খাতুনের ঝা মীনা বেগম জানান, মাত্র ৫/৭ মিনিটে আমার ঝা’এর সিজার করেই তাড়াহুড়ো উক্ত চিকিৎসক ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা ঢাকায় নিয়ে গেলে ঐখানকার চিকিৎসক জানান, নাজমা খাতুন ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন। (সোমবার) সকালে আমার ঝা আদ্ব-দ্বীন হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আমরা লাশ নিয়ে রামগঞ্জে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। খবর পেয়ে আমাদের আত্মীয়স্বজনরা হসপিটাল ঘেরাও করে উক্ত চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, রামগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ প্রাইভেট হসপিটালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেবা প্রদান করলেও অধিকাংশ চিকিৎসকের কোন কাগজপত্র নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি করা প্রয়োজন। সোমাবার অভিযুক্ত চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে বার বার কল দেয়া হলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।