উত্তরের জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আগাম আলু তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। আলু উৎপাদন করে ভাগ্য বদলের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতে ভূমিকা রাখছেন তারা। এবার আলুর দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষকরা। মাঠেই নতুন আলু ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ উপজেলা রনচন্ডী ইউনিয়নের কুঠিয়াল পাড়া গ্রামের কয়েকজন কৃষককে আগাম আলু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। আলু রোপণের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে আলু উত্তোলন করতে পারছেন তারা। এ অঞ্চলে চাষ হওয়া আলু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে কেউ মাটি খুঁড়ছেন, কেউ কুড়াচ্ছেন। কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছেন। কোথাও আবার ডিজিটাল মিটারে চলছে ওজন পরিমাপের কাজ। পরে সেখান থেকে আলুগুলো ভর্তি হচ্ছে গাড়িতে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে।
জানা গেছে, প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক আগাম আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার ধরার আশায় আগেভাগে আলুর বীজ বপন করেন। বর্তমানে সেই খেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই খেত থেকেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কয়েকদিনের মধ্যে পুরোপুরি মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে। চলতি বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষক আনারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বরাবরের মতো চলতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরে বুননকৃত জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে ফলনযোগ্য আগাম আলু উত্তোলন করছি। জমিতে নারী-পুরুষ মিলে ২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও বাড়তি খরচ ছাড়াই খেত থেকেই আলু ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলাম।
আরেক কৃষক আকবর হোসেন বলেন, আমি আগাম আলু রোপণ করেছিলাম। আমার খরচ গিয়ে মোটামুটি ভালো লাভ হবে। কেজি প্রতি ৯০ টাকা পাইকারের কাছে বিক্রি করলাম।
ঢাকা থেকে আলু কিনতে আসা পাইকার মাসুদ রানা বলেন, প্রতি বছর এখান থেকে আগাম আলু নিয়ে গিয়ে রাজশাহী, বগুড়া ও ঢাকায় বিক্রি করি। এখান থেকে আগাম আলু কিনে ঢাকায় বিক্রি করলে বর্তমান বাজারে যাতায়াত খরচ গিয়ে মোটামুটি লাভ হবে আশা করছি।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লোকমান আলম বলেন, প্রতি বছর এ উপজেলার কৃষকরা আগাম সেভেন জাতের আলু চাষ করে থাকেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এ বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আলু ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। এবারে কৃষকরা ৯০ টাকা কেজি দরে আগাম আলু বিক্রি করছেন।