মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নওগাঁয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রেখে তালাবদ্ধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। সোমবার স্কুলে পাঠদান বন্ধ ও তালাবদ্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে ফিরে গেছে। তবে শিক্ষকরা অফিসে বসে যে যার মতো গল্প করে সময় পার করছেন। জানা গেছে- সরকারি স্কুলের পাঠদান ও বেসরকারি স্কুলের পাঠদান একই। কিন্তু সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের তুলনায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বৈষ্যমে শিকার হতে হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রোববার ২ ঘন্টা পাঠদান করার পর শ্রেণীকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষকরা। তাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষকরা। জেলার ৪৬৬ টি স্কুল পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরাও বিড়ম্বনায় পড়েছে। দ্রুত শিক্ষকদের দাবী মেনে নিয়ে আবারও শ্রেণীকক্ষে ফিরতে চাই শিক্ষার্থীরা। হাঁপানিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্র রুবেল হোসেন বলেন- শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে শ্রেণীকক্ষে তালা ঝুঁলিয়েছে শিক্ষকরা। এতে পাঠদান বন্ধ আছে। পাঠদান বন্ধ থাকলতো আমাদের জন্য সমস্যা। কবে সমস্যা সমাধান হবে আর আমরা ক্লাসে ফিরবো বলা যাচ্ছে না। এতে করে আমরা পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়বো। শিক্ষকদের দাবী মেনে নেয়া হোক। আমরা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চাই। সহকারি শিক্ষক আব্দুর রব বলেন- সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে অনেক বৈষম্য রয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এ বৈষম্য আর মেনে নেওয়া যায়না। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবো না। তাই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ চাই। হাঁপানিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো: নূরুল ইসলাম বলেন- রোববার ২টা বিষয়ে পাঠদান করে ক্লাসে তালা ঝুলানো হয়। সোমবার সকাল থেকেই অনিদিষ্ট কালের জন্য তালাবদ্ধ। তবে কবে চালু হবে বলা যাচ্ছে না। সাময়িক বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। পরে সেটা পুষিয়ে দেওয়া হবে। এবিষয়ে জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আসলাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বলেন, চলমান জাতীয়করণ আন্দোলনে আমরা শিক্ষক সমিতি একাত্মতা প্রকাশ করেছি। আমাদের নিজেদের স্বার্থে এই আন্দোলনে সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে কার্যসম্পাদনে জেলার ১১ টি উপজেলার শিক্ষক নেতৃবৃন্দের অংশ গ্রহণে ভার্চুয়ালি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যতদিন দাবী আদায় না হবে আন্দোলন চলমান থাকবে। নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান কে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে সহকারি পরিদর্শন নাজমুল হোসাইন বলেন, জেলায় ৯২৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে ৪৬৬ টি হাইস্কুল। তালাবদ্ধ কর্মসূচী হলেও স্কুলে দুইটি করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।