কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম ঈশ্বরদী অরোনকোলা পশুরহাট ও পাবনার হাজির হাটসহ ছোটবড় পশুর হাটগুলোতে কমবেশি গরুছাগল উঠতে শুরু হয়েছে। মঙ্গলবারও অরোনকোলা হাটে আমদানি হয়েছে ছোটবড় দেশি কয়েক প্রজাতির গরু। স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা হাটে নিয়ে আসছেন তাদের গরু। তবে আমদানি বেশি হলেও দাম বেশি থাকায় বিক্রি কম হচ্ছে। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির আগেই গরুর দাম চড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা বলছেন, সরিষার খৈল, ছোলার ভুসি, খেসারি, মাসকালাইয়ের ভুসি, ধানের গুঁড়াসহ সব গোখাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় এবার গবাদিপশু পালন ব্যয়ও বহুল ছিল। হাটে ক্রেতারা যে দাম বলছেন খামারিদের কাছে তা খুবই কম। ক্রেতারাও বলছেন, এবারে পশুর দাম একটু বেশিই।
সরেজমিনে অরনকোলা পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, ছোটবড় ষাঁড়, বকনা গরু ও শাহিওয়াল জাতের গরুতে পরিপূর্ণ হাট। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমও বিপুল। তবে বড় সাইজের পশুর দাম অনুযায়ী ছোটগুলোর দাম একটু বেশি। সাধারণ ক্রেতাদের ছোট গরুই বেশি পছন্দ করতে দেখা গেছে। ৬০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা দামের গরুও প্রথম দিনের এই হাটে ওঠে। অরোনকোলার আইয়ুব আলী ডেইরি খামারের স্বত্বাধিকারী জীবন হোসেন বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমার খামারে ছোটবড় ৫০টি গরু পালন করেছি। আজকের হাটে ১০টি গরু নিয়ে এসেছি। ক্রেতাদের সমাগম মোটামুটি থাকলেও বিক্রির অবস্থা খুবই খারাপ। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় গরু পালনে বিপুল ব্যয় হচ্ছে। প্রায় দুই মাস আগে থেকেই গরুর দাম বাড়তি। দাম বাড়ার কারণেই বিক্রি কম হচ্ছে। আশা করছি, সামনের হাটে বেচাকেনা একটু ভালো হবে। সরাবাড়ি এলাকার আকুল হোসেন বলেন, আমার বাড়িতে পোষা দুটি গরু হাটে নিয়ে এসেছি। হাটে ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না। যারা এসেছেন তারা যে দাম বলেন, সে টাকায় পশু পালনের খরচও উঠবে না। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে গরু কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম পশুর হাট অরনকোলা। প্রত্যেক বছর বেশ কয়েকটা হাট ঘুরে ঘুরে গরু ক্রয় করি। ঈদকে টার্গেট করে আজকে অরনকোলা পশুর হাটে দেশি জাতের ছোটবড় গরু আমদানি শুরু হয়েছে। মূলত হাটের পরিস্থিতি দেখার উদ্দেশ্যেই এসেছি। হাটে গরুর আমদানি প্রচুর, তবে দাম অনেক চড়া। এক মণের দাম ৩৫ হাজার টাকা আইডিয়া করে গরু কিনতে হবে। স্থানীয় ক্রেতা আরিফ বিশ্বাস বলেন, হাটে গরুর দাম বেশ চড়া। গত বছরও তুলনামূলক কম ছিল দাম। হাট ঘুরে যা বুঝলাম, এ বছর আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কোরবানির পশু কেনা কঠিন হয়ে যাবে। তিন মণ ওজনের একটি গরুর দাম ১ লাখ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা। সামনে হাটগুলো জমজমাট হলে আশা করছি, দাম একটু কমতেও পারে। অরোনকোলা হাটের ইজারাদার রুনু মণ্ডল জানান, উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট আমাদের অরনকোলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হয়। কোরবানিকে সামনে রেখে হাটে গরু আমদানি হয়েছে প্রচুর। অনলাইনেও খামারিরা বিক্রি করছেন। তবে বাড়তি দামের কারণে বেচাকেনা একটু কম হচ্ছে।