পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক স্টেনো কাম টাইপিস্ট হাজতী আসামী মোঃ খলিলুর রহমান (৫৮) এর দ্বিতীয়বার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত পটুয়াখালী। হাজতী আসামী স্টেনো খলিলুর রহমান গত ০৫.০৬.২৩ ইং তারিখ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত ১২.০৬.২৩ইং তারখ শুনানীর জন্য ধার্য্য করেন। যার মিসকেস নং- ৩০৫/২০২৩। সোমবার (১২.০৬.২৩খ্রিঃ) উক্ত বিজ্ঞ আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের জেরা শেষে হাজতী আসামী স্টেনো খলিলুর রহমানের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন। ঘটনা সুত্রে জানা যায় , পটুয়াখালী জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মোঃ মহিউদ্দিন আল মাসুদ পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় তাকেসহ তিন সদস্য বিশিস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলার প্রইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগোনস্টিক সেন্টার সমূহের যাচাই বাছাই করে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম কবির হাসান। সিভিল সার্জন কর্তৃক অফিস আদেশ মোতাবেক জেলার প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সমূহের নবায়ন ও নতুন রেজিঃ বিষয় তদন্ত করে তথ্যাদি সিভিল সার্জনকে অবহিত করেন মহিউদ্দিন আল মাসুদসহ কমিটি। তদন্ত রিপোর্টে সিভিল সার্জন অফিসের স্টেনো কাম টাইপিস্ট মোঃ খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেস্থাচারিতার তথ্য ফাঁস হয়। ঘটনারদিন ২৮.০৭.২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক ৩.৩০ মিঃ সময় জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মহিউদ্দিন আল মাসুদ ও তদন্ত কমিটির সভাপতি মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ তৌফিকুর রহমান রাকিবদ্বয় সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারীর কক্ষে কম্পিউটারে কর্মরত অফিস সহকারী কাম টাইপিস্ট মোঃ বেল্লাল হোসেনকে স্টেনো খলিলুর রহমানের কাছ থেকে পূর্বের সংরক্ষিত জেলার প্রইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগোনস্টিক সেন্টার সমূহের তালিকা আনার জন্য বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্টেনো খলিলুর রহমান, অফিস সহকারীর টেবিলে থাকা ধাড়ালো স্টিলের স্কেল দিয়ে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মহিউদ্দিন আল মাসুদের মাথায় উপুর্যপরি আঘাত করে। এতে মহিউদ্দিন আল মাসুদ রক্তাক্ত জখম হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। উপস্থিত তদন্ত কমিটির সভাপতি ডাঃ মোঃ তৌফিকুর রহমান রাকিব ও অফিস সহকারী মোঃ বিল্লাল হোসেনসহ অন্যান্যরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মহিউদ্দন আল মাসুূদ ২৯.০৭.২২ ইং তারিখ উক্ত স্টেনো খলিলুর রহমানকে আসামীর বিরুদ্ধে সরকারী দায়িত্ব ও কর্তব্য কাজে বাঁধা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ধাড়ালো স্কেল দিয়ে উপুর্জুপরি মাথায় ও বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ এনে সদর থানায় একটি মামলা রুজু করেন। মামলা নং- ৩২। মামলার তদন্ত অফিসার এস আই মোঃ আলাউদ্দিন স্টেনো খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে দন্ডবিধি ৩০৭, ৩৫৩, ৩২৩ ধারায় চার্জসিট দাখিল করেন। চার্জসিট দাখিলের পর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ আশিকুর রহমান আসামী স্টেনো খলিলুর রহমানের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। প্রায় দুইমাস পলাতক থাকার পর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ বিচারক মোঃ জামাল হোসেন তাকে জামিনের আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে এজাহারকারী মহিউদ্দিন আল মাসুদ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিসকেস/ আপীল করেন। যার নং- ৭১/২০২৩। বিজ্ঞ আদালত ১৪.০২.২০২৩ ইং তারিখ শুনানী শেষে আসামী স্টেনো খলিলুর রহমানের জামিন আদেশ বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ জারি করার জন্য নথিপত্র বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরন করেন। বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ০১.০৩.২০২৩ ইং তারিখ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ আদেশ জারির প্রায় তিন মাসপর ০১.০৬.২০২৩ ইং তারিখ উক্ত আসামী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত জমিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। হাজতী আসামী খলিলুর রহমান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টট আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে ০৫.০৬.২০২৩ইং তারিখ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিসকেস করে জামিনের প্রার্থনা করেন। যার নং- ৩০৫/২০২৩ইং। এ মিসকেসের শুনানীর জন্য বিজ্ঞ আাদালত ১২.০৬.২৩ইং তারিখ ধার্য্য করেন। অদ্য সোমবার (১২.০৬.২৩ইং) উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিনের প্রার্থনা না মঞ্জুর করেন। উক্ত মামলার রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী ০১.০৬.২৩ ইং তারিখ উক্ত আসামীকে ঈ/ ড মূলে জেল হাজতে প্রেরনের সইমোহরের কপি ০৮.০৬.২৩ ইং তারিখ হাজতী আসামী স্টেনো খলিলুর রহমানের বর্তমান কর্মস্থল পিরোজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং বিভাগীয় পরিচালক ( স্বাস্থ্য) এর বরাবরে আসামীর বিরুদ্ধে বিএসআর বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রেরন করা হয়েছে বলে মামলার বাদী মহিউদ্দিন আল মাসুদ প্রতিবেদককে জানান। এ ব্যাপারে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ হাসানাথ ইউসুফ জাকি এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান স্টেনো খলিলুর রহমান ৬ মাস আগে রিটার্ডে গেছে। তার হাজত সম্পর্কে জানেন না। বরিশাল বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ হুমায়ুন শাহিন জানান পিপির চিঠি পেয়েছি, ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।