বৃদ্ধ পিতাকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে স্বপ্ন পূরণ করলেন মরিশাস প্রবাসী ছেলে। প্রবাসে যাওয়ার পূর্বে হেলিকপ্টারে পিতাকে নিয়ে নিজ গ্রাম থেকে ঢাকা ফিরে যান ছেলে আকাশ মিয়া।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাটিগ্রাম এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এদিকে এমন খবর আগেই প্রচার হয় গ্রামে। দৃশ্যটি দেখতে শতশত লোক জড়ো হন বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণে। বৃদ্ধ পিতাকে সাথে নিয়ে হেলিকপ্টারে উঠার আগে প্রবাসী আকাশ মিয়াকে গ্রামের মানুষ ও তাদের আত্মীয় স্বজনেরা বিদায় দেন। এসময় তাদের সাথে সফরসঙ্গী ছিলেন, প্রবাসী আকাশ মিয়ার ছেলে জাহিদ মিয়া ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আশিকুর রহমান।
আকাশ মিয়া (৩৯) আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে। প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মরিশাসে থাকেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার মরিশাস থেকে দেশে আসেন। পরে পিতা জাকির মিয়ার (৬৪) স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টার ভাড়া করে নিজ গ্রাম থেকে ঢাকা ফিরে যান। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবার প্রবাস জীবনে ফিরে যাবেন তিনি।
গ্রামবাসীরা জানান, ‘আমাদের গ্রাম থেকে প্রথম হেলিকপ্টারে গিয়েছেন আকাশ মিয়া। সেইসাথে স্বপ্ন পূরণে তার পিতাকেও সাথে নিয়েছেন। এটা পিতার প্রতি ছেলের অন্যরকম ভালোবাসা।’
প্রবাসী আকাশ মিয়া বলেন, ‘আমার পিতার স্বপ্ন ছিল আমি বিদেশে যাওয়ার সময় সে হেলিকপ্টারে গ্রাম থেকে আমার সাথে ঢাকা যাবে। পিতার প্রতি ভালোবাসা থেকে সেই চেষ্টা করেছি। পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে, আনন্দ লাগছে।’
প্রবাসী আকাশ মিয়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি শুরু হলে মরিশাসের আসমোক কোম্পানী লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন গুণীজনের মাধ্যমে প্রবাসে থেকেও পাঁচ শতাধিক হতদরিদ্র পরিবারের নামের তালিকা তৈরী করেন। এরপর তাদের খাদ্য সহায়তা নামক কার্ড তৈরী করে প্রায় দুই বছর ধরে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে চাল দেন। ঈদের সময় সেমাই-চিনি থেকে শুরু করে গরুর মাংস পর্যন্ত বিতরণ করেন। সেইসাথে নতুন পোশাকও উপহার দেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান ছাড়াও খেলার সরঞ্জাম, চিকিৎসা ও ঘর তৈরি করে দেন। শুধু তাই নয়; খাদ্য সহায়তা নিতে আসা হতদরিদ্রদের যাতায়াতে ভাড়াও দিয়ে দেন। এসব মানবিক কর্মকাণ্ড পালন করে সর্ব মহলে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।