রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় শরীরে শতাধিক গুলির ‘পিলেট’ নিয়ে এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থী। পিলেট ঢুকে তাঁর পাচকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে গেছে। গত রোববার চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর এক্স-রে ফিল্মে ১০৭টির বেশি পিলেট পাওয়া গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওই শিক্ষার্থীর অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
গত ১১ মার্চ শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে সংঘর্ষের সময় গুলিতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম মশিউর রহমান ওরফে মিহাদ (২৩)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র। তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রামের ইসলামপুর গ্রামে। খবর পেয়ে তাঁর ভাই আতাউর রহমান রাজশাহীতে এসেছেন।
মশিউরের সহপাঠী সাগর জানান, ঘটনার দিন সবাই বিনোদপুর গেটের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানে কী হয়েছে, দেখার জন্য তাঁরাও গিয়েছিলেন। রাত ১০টার পর পুলিশের গুলিতে মশিউর গুরুতর আহত হন। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। শুরুতে তার ক্ষতস্থানের রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। পরদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।
সাগর বলেন, গুলিতে মশিউরের নাড়ি ছিদ্র হয়ে গেছে। অস্ত্রোপচার করে সেটা জোড়া দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর থেকে তাঁকে সার্জারির পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, গুলির পিলেট ঢুকে ছেলেটির পাচকতন্ত্রে ছিদ্রের মতো হয়েছিল। দীর্ঘ সময় অস্ত্রোপচার করে সেটি ‘রিপেয়ার’ করা হয়। অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে বের করে তাঁকে পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
শনিবার (১১ মার্চ) রাবি সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে রাবির প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক অজ্ঞাতনামা আসামী করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, মতিহার থানা পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন