দুই দিনব্যাপী ‘‘নিউরোস্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশ” (এনএসএসবি) এর চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের রডিসন ব্লু-তে প্রধান অতিথি হিসেবে এ সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও দ্বিতীয় দিনে দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা হাতেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরবর্তী স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন তাঁর (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয়। তাঁর হাতেই দেশের সরকারি বেসরকারি আধুনিক চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র গড়ে ওঠে। তাঁর নানামুখী উদ্যোগের কারণে দেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা টানা থাকার কারণে দেশের উন্নয়নের চিত্রপট পরিবর্তন ঘটেছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা দুর্বার গতিতে ছুটছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ় চেতনা, সঠিক পরামর্শ, আলাদা বাজেট বরাদ্দ ও অনুপ্রেরণা করোনাভাইরাস মহামারী যুদ্ধে বাংলাদেশ সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক পর্যায়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের সেবা দিচ্ছে। বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার, কিডনি, প্লাস্টি সার্জারি সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠছে।নিউরোসাউন্সের মত আধুনিক সেবা প্রতিষ্ঠান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গড়ে তুলেছেন। তার হাতেই বাংলাদেশ আজ উন্নত বিশ্বের দিকে ধাবিত হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত বজায় রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বর্তমানে নিউরো সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা বাংলাদেশে করতে সক্ষম। তবে প্রয়োজনের তুলনায় দক্ষ লোকবল কম। মানুষের প্রয়োজনে স্নায়ুবিক রোগের চিকিৎসার জন্য নিউরোসার্জন সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান করা হয়। এর আগে সম্মেলনের প্রি ওয়ার্কসপ হিসবে মঙ্গলবার দিনব্যাপী রাজধানী ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এনাটমি বিভাগে মঙ্গলবার দিনব্যাপী মৃত বা ডেথবডির উপর স্পাইনাল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের উপর হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করা হয়। নিউরোস্পাইন সোসাইটির ৪র্থ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে মাননীয় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলেই স্বাস্থ্যসেক্টরসহ উন্নয়ন হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা কমেছে। দেশের গড়ায়ু বৃদ্ধি পেয়েছে।দেশের ওষুধ শিল্পের বিপ্লব ঘটেছে। দেশের ওষুধ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব শিল্পের দ্বার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই উন্মুক্ত হয়েছে। মেয়র বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের ফলে করোনাভাইরাস যুদ্ধে বাংলাদেশে সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে। করোনাভাইরাস শুরুর সময় ঘনবসতি হবার ফলে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম।কিš‘ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিডিয়ার সামনে এসে করোনাভাইরাস যুদ্ধে করণীয় সম্পর্কে বলার পর দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ঘুরে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে বারবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ২১২ জন জন নিউরোসার্জন রয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণের অনুযায়ী দরকার ১৬০০ জন নিউরোসার্জনস। একসাথে না পারলেও ধীরে ধীরে এ আসন সংখ্যা বাড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রয়োজনে নিউরোসার্জনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের অধীনে যেখানে ফ্যাকাল্টি আছে সেখানে আসন সংখ্যা দেরগুণ ও দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা হবে। যেখানে ফ্যাকাল্টি নেই সেখানে আমরা কোর্স বন্ধ করে দেবো। আমরা সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে কোয়ালিটি ইনসিউর করতে চাই। অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই দেশের সকল উন্নয়ন সম্ভব হয়ছে । দেশের স্বাস্থ্যখাতের ভিত্তি বঙ্গবন্ধুর হাতে রচিত হয়েছে। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই পরিপূর্ণতা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস যুদ্ধের মহানায়ক। তাঁর হাতেই দেশের স্বাস্থ্যখাত উন্নত হয়েছে।স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া লোকের সংখ্যা কমছে।করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম এবং সারাবিশ্বে পঞ্চম অধিকার লাভ করেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতসহ সকল খাতের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ ও স্বাচিপের সাবেক সফল মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা সব সময় শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিকিৎসকদের দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্যসেক্টর ঢেলে সাজান। স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের সম্মানিত ডিন ও সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে নিউরোসার্জারি বিভাগ চালু করেন অধ্যাপক রশিদ উদ্দিন স্যারকে দিয়ে খুলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আধুনিক নিউরো সার্জারির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতায় থাকলে ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির মডেলে রুপান্তরিত করতে পারব। বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির মডেলে রূপান্তরিত করতে পারলে দেশের বাইরে আর কোন মানুষকে যেতে হবে না। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউরো স্পাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউরোস্পাইন সোসাইটির ভারপাপ্ত সভাপতিত্ব অধ্যাপক ডা. মো. কামালউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের ডা. এটিএম আসাদুল্লাহ। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে নিউরোসার্জন ও নিউরোস্পাইন সার্জনরা অংশগ্রহণ করেন।