দক্ষিণ সুদানে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী। সোমবার (স্থানীয় সময়) দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়ায়ু শহরে স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্যবই বিতরণ করেন সেখানে নিয়োজিত বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সেনাসদস্যরা।
পাশাপাশি শিক্ষকদেরকেও শিক্ষাদান উপকরণ সরবরাহ করা হয়। মঙ্গলবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের দক্ষিণ সুদান শাখা ইউএনমিআইএসএসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর এ অবদান তুলে ধরা হয়।
নতুন বই পেয়ে আনন্দে আত্মহারা ব্রাইট ফিউচার স্কুলের ছাত্র ওমিন্ডো মালেক আপ্লুত কণ্ঠে বলে, ‘নিজের হাতে নতুন বই ছুঁতে পেয়ে আমি শিহরিত হয়ে উঠি। এমন একটা নতুন বই পাব- এ আমার অনেক দিনে স্বপ্ন ছিল। তারা আমাদের জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে।’
হোলি চাইল্ড স্কুলের শিক্ষক ডেনিস ওপিও বলেন, ‘আমি জানি প্রত্যেক শিশুরই স্কুলে যাওয়া এবং শিক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ শিশুই শিক্ষাবঞ্চিত। শান্তিরক্ষী বাহিনীর এ দান শিশুদের পথপ্রদর্শক হবে।’ যুদ্ধপীড়িত এ অঞ্চলের বাস্তুচ্যুত পরিবারের ছেলেমেয়েরা দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষা-সুবিধাবঞ্চিত।
করোনা মহামারীর কারণে আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাদের দৈনন্দিন জীবনব্যবস্থা। সেখানে স্কুল-লেখাপড়া ছিল রীতিমতো দুঃস্বপ্ন। এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থার মাঝেই তাদের মাঝে শিক্ষার বাতিঘর হয়ে দেখা দিল বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী।
ওয়ায়ুতে দায়িত্বরত বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খালিদ ইফতেখার বলেন, দ. সুদানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষা ছাড়া সে লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন।
এ জন্যই ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার এ উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনকারী দেশ হিসেবে আবারও বাংলাদেশ প্রথম স্থান অধিকার করার গৌরব অর্জন করেছে।
এতে দেশ ও জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ হয়েছে সম্মানিত ও গৌরবান্বিত। জাতিসংঘ সদর দফতরের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগেও বাংলাদেশ ২০০১, ২০০৫, ২০১১, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনে প্রথম হয়ে এই বিরল কৃতিত্বের অংশীদার হয়েছিল।