পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কম্পেøক্সে ভর্তিকৃত রোগীরা ব্যাতিক্রমধর্মি সেবা পাচ্ছেন। সরকারী সরবরাহকৃত সব ধরনের ঔষুধ দেয়া হচ্ছে তাদের। বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১৫ আগষ্ট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পাবনা মানসিক হাসপাতালের আদলে সরকারী বরাদ্দের মধ্যেই দেয়া হচ্ছে চার বেলা পুষ্ঠিকর খাবার। দেশের কোন উপজেলা স্বাস্থ্য ক¤েপ্লক্সে চারবেলা খাবার দেবার নজির এটাই প্রথম। এতে চিকিৎসার পাশাপাশি শরীরে পুষ্ঠিগুন বেশী পাওয়ায় রোগীদের রোগ দ্রুত নিরাময়ে সহায়ক হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পঞ্চাশ শয্যার এ হাসপাতালে মঙ্গলবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ৪৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। ভাদরা গ্রামের নাজমা খাতুন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান পূর্বের চেয়ে বর্তমানে অত্যান্ত ভাল। বেশীর ভাগ ঔষুধ হাসপাতাল থেকে দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, বছর খানেক আগে তার স্বামী নজরুল ইসলামকে পেটের ব্যাথা নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন হাসপাতাল থেকে কোন ঔষুধ দেয়া হতো না, এমনকি ক্যানোলা-স্যালাইনও বাহির থেকে কিনতে হয়েছে। তিন বেলা খাবার দেয়া হতো কিন্তু সেটা তেমন মান সম্পন্ন ছিলনা। খাবারও কম দেয়া হতো। বর্তমানে তিনি ভর্তি হয়ে সব ধরনের উন্নতমানের সেবা পাচ্ছে বলে দাবী করেন। চারবেলা খাবার পেয়ে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন। বাঙ্গালদা গ্রামের ৬৫ উর্দ্ধ বয়সী হযরত আলী জানান, তিনদিন আগে তিনি বুকে ব্যাথা, এ্যাজমাসহ অন্যান্য রোগ নিয়ে এ কম্পেøক্সে ভর্তি হন। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ী যাচ্ছন। তিনি জানান, বর্তমানে এখানে ভাল চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারী মানসম্মত ঔষুধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহের কারনে দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ী যেতে পারছে। এর আগেও এখানে ভর্তি থেকে এমন সেবা পায়নি। চার বেলা খাবার পাওয়ায় তিনি খুশি। চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেøক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরমিলা আখতার ঝুমি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন বর্হি:বিভাগে গড়ে দেড় থেকে দু’শ জন রোগীর চিকিৎসা সেবাসহ প্রয়োজনীয় ঔষুধ দেয়া হচ্ছে। সাতটি শিশু ও সাতটি প্রসূতি মায়েদের শয্যা রয়েছে। বর্তমানে মাসে গড়ে ৪০-৪৫টি নরমাল ডেলিভারী করানো হচ্ছে। কম্পেøক্সে এক্সরে মেশিন ভাল আছে। এক্সরে ও ইসিজি এখানেই করানো হয়। আলট্্রাসোনোগ্রাম মেশিন থাকলেও তাদের যোগদানের আগে প্রিন্টার চুরি যাওয়ার কারনে আলট্রাসোনোগ্রামের রোগীদের বাাইরে যেতে হয়। এ চুরি ব্যাপারে থানায় কোন জিডি বা মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানেন না বলে জানান। চাটমোহর এলাকার মোশারফ হোসেন বলেন, চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেøক্সে স্থাপনের পর থেকে বর্তমানে এখানে ভাল চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে বলে সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে শুনেছি। চাটমোহরে প্রায় জায়গাতেই এ ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। শুনেছি এখন ভর্তিকৃত রোগীদের চার বেলা খাবার দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালের সার্বিক অব্স্থা ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় চার লক্ষ অধ্যুসিত চাটমোহর উপজেলার মানুষ যারাই এটা জেনেছে সবাই সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে। পাবনার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেøক্সসহ দেশের অন্যান্য স্বাস্থ্য কম্পেøক্সে চার বেলা খাবারসহ সরকারী সরবরাহকৃত ঔষুধ চাটমোহরের মত বিলি বন্টনে সচ্ছতার দাবী করেন তিনি। চাটমোহরের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেøক্সে যেভাবে রোগীদের খাবারসহ স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে, তাতে বোঝা যায়, প্রশাসন সচ্ছ থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব। চাটমোহর বাসীকে সুষ্ঠ সেবা প্রদানের জন্য তিনি বর্তমান প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান। চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কম্পেøক্সের কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারূক বুলবুল বলেন, সরক্রী বরাদ্দের মধ্যে সার্বিকভাবে যতটা সম্ভব রোগীদের সেবা দেবার চেষ্টা করছি। জরুরী অস্ত্রপাচার করা রোগীদের সেবা দিতে না পেরে তিনি দু:খ প্রকাশ করেন। কম্পেøক্সের অপারেশন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতি ভাল থাকার পরেও সার্জারী কনস্যালট্যান্ট ও এ্যানেসথেসিয়ার কোন চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সরকারী বিধি বিধানের মধ্য থেকে সার্বিকভাবে রোগীদের সুষ্ঠ চিকিৎসা সেবা ও অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।