প্রতি বছর বন্যার পরে এবং আগে চরবাসির একটায় চিন্তা খোর্দ্দার বুড়াই সাঁকোটির উপর দিয়ে সারা বছর পরিবার পরিজন নিয়ে চলাচল করা যাবে কি না। আর তখনেই দাবি উঠে সাঁকোটির সংস্কার ও মেরামতের । কে মেরামত করবে তা নিয়ে ভাবনার শেষ নাই চরবাসির। দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয়দের সহায়তা, স্বেচ্ছাশ্রম, ইউনিয়ন পরিষদ, বিদ্যুাৎসাহী ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় সাংসদের আর্থিক অনুদানে নিমার্ণ করা হত সাঁকোটি। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা, চর খোদ্দা, লাঠশালা, বৈরাগী পাড়া, মন্ডলপাড়া গ্রাম ও কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজড়া এবং গুনাইগাছ ইউনিয়নের চরবিরহীম, সাধুয়া, দামারহাট, নাগড়াকুড়া, কালপানি, হুকাডাঙ্গা ও থেথরাই গ্রামের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত খোদ্দার্ ক্যানেলের ( তিস্তার শাখা নদী) উপর বুড়াইল সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। দুই উপজেলার মানুষের সেতু বন্ধনের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সাঁকো। এছাড়া হাজারও স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং দুই উপজেলায় সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীরা প্রতিদিন চলাচল করে থাকেন সাঁকোর উপর দিয়ে। চলতি বছর নড়ে বড়ে সাঁকোটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান স্থানীয়রা। ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সমন্বয় করে স্ট্যার্ট ফান্ড বাংলাদেশের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে ক্যানেলের উপর নতুন করে কাঁঠের সাঁকো নিমার্ণ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউণ্ডেশন। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে সাঁকোটির উদ্বোধন করেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল মুনছুর, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-উ মাহমুদ, তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, এসকেএস ফাউন্ডেশনের এসিসন্টেড ডিপুটি ডাইরেক্টর খন্দকার জাহিদ সরোয়ার সোহেল, সৌহদ্য-৩ কর্মসুচির প্রজেক্ট ম্যানেজার শংকর কুমার রায়, উপজেলা কো-অডিনেটর মোখলেছুর রহমান, প্রকল্প অফিসার মিজানুর রহমান, টেকনিকেল অফিসার রুমা বেগম, নারায়ন চন্দ্র, রুহুল আমিন, নজরুল ইসলাম, মশিউর রহমান প্রমুখ। জানা গেছে, কংক্রিটের খুঁটির উপর লোহার পাতের মাঝে কাঁঠের পাঠাতন বসিয়ে নিমার্ণ করা হয়েছে ১০০মিটার লম্বা সাঁকোটি। এতে ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ দিয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। স্থানীয় শিক্ষক রেজাউল ইসলাম জানান, সাঁকো চালু হওয়ায় চরবাসি নিদারুন কষ্ট হতে রেহাই পেল। সাঁকোটি মেরামত না হলে অনেক কষ্ট করে চলাফেরা করতে হত। সাঁকোটি নিমার্ণ করে দেয়ায় এসকেএস ও ইউনিয়ন পরিষদকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এছাড়া চরবাসি মহাখুশি। তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, সাঁকো চালু হওয়ায় শুধুমাত্র সুন্দরগঞ্জ উপজেলাবাসি নয়, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামবাসি দারুনভাবে উপকৃত হয়েছে। চরবাসি মহা আনন্দদিত। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউণ্ডেশনের পাবলিক রিলেশন এণ্ড কমিউনিকেশনের সমন্বয়কারী আশরাফুল আলম বলেন, স্ট্যার্ট ফান্ড বাংলাদেশের অর্থায়নে বন্যায় সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যানেলেরউ পর কাঠের সাঁকোটি নিমার্ণ করা হয়। এতে করে চরবাসির চলাচলের সুবিধা হবে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান, দীর্ঘ দেড় মাস বন্যার পানিতে ডুবে ছিল চরবাসি। সে কারনে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সাঁকোটি চালু হওয়ায় চরবাসি অনেকটা উপকৃত হবে।