জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধি ও প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন।
নগরীর ধানমন্ডির আবাহনী লিমিটেডে ক্রীড়া কমপ্লেক্সে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে আজ বুধবার সকালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক ও মির্জা আজম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ কামালের সমাধিতে দলের নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময়ে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
১৯৪৯ সালের আজকের এদিনে শেখ কামাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের হাতে তিনিও নির্মমভাবে নিহত হন।
বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচ- উৎসাহ ছিল তাঁর। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
শহীদ শেখ কামাল আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী স্বেছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, শেখ কামালের সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
এছাড়া যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, আবাহনী ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পরিচালকবৃন্দ, আবাহনী সমর্থক গোষ্ঠী, আবাহনী কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়বৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠন শেখ কামালের সমাধি ও প্রতিকৃতিতে পৃথকভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।