আগস্ট মাস বাঙালির শোকের মাস। ১ আগস্ট শনিবার থেকে শুরু হলো ‘শোকাবহ আগস্ট’। কেবল জাতির পিতা নয়, তাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে ইতিহাসের এই দিনটিকে সবচেয়ে কলঙ্কিত দিনে পরিণত করেছে হত্যাকারীরা। যে জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, যে জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে কেবল গুছিয়ে নিতে শুরু করেছেন, এদিন ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছিল সেই পিতার প্রাণ।
১৯৭৫ সালের ১৫ তারিখে প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্র স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত এক বেদনাবিধূর শোকের দিন। সেদিন খুনিরা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করেছিল। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়।
ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী, মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল ও তার স্ত্রী রোজী জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র কিশোর শেখ রাসেল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির পিতার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলেও ওই সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পিতা-মাতা সব হারানো দুই বোন দেশেও ফিরতে পারেননি। শরণার্থীর মতো তাদের থাকতে হয়েছে বিদেশ-বিভূঁইয়ে।