রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর ভাঙন আতঙ্কে গবাদি পশুসহ মালামাল নিয়ে রাস্তায় অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে আতঙ্কিত মানুষজন। ভাঙন আতঙ্কে আগাম প্রস্তুতি হিসাবে তারা এমনটি করছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল এক সপ্তাহ আগের বন্যায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ফসলসহ রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পুকুর, মৎস্য খামারের কয়েক লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। বন্যা কমে যাওয়ার সাথে ওইসব চরাঞ্চলে তিস্তার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছেন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলছে। কিন্তু মাটি সংকুলান হওয়ায় কাজ ধীরগতিতে হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে চর শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছ। বিনবিনার পাকা রাস্তার ৩’শ ফুট, চিলাখাল চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু অংশ ভেঙে গেছে।হুমকিতে পড়েছে শংকরদহ হাফেজিয়া মাদরাসা,পাইকান আকবরিয়া মাদরাসা সাউদপাড়া মাদরাসাসহ মসজিদ, পোস্ট অফিসসহ কয়েকটি গ্রাম ও ফসলী জমি।
এছাড়া লক্ষ্মীটারীর শংকরদহের আশ্রয়ণ গ্রামের বাড়িসহ প্রায় ৫ শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামটিতে রয়েছে আর ৭০টির মত বাড়ি। কোলকোন্দের বিনবিনা ও চিলাখালের ১৫টি বাড়ি বিলীন হয়েছে।
এদিকে ভাঙন আতঙ্কে শংকরদহের বেশ কিছু পরিবার বাড়ি ছেড়ে মালামাল নিয়ে রাস্তায় বসবাস করছে।
এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় শরিফা বেগম ও আপেল মিয়া নামের দুই নারী-পুরুষের। তারা জানান, তিস্তা নদীর তীরে তাদের বাড়িঘর। তিস্তার বেড়ি বাঁধটির আর ৩-৪ ফুট ভাঙলে পানি এসে তাদের বাড়ি তলিয়ে যাবে। যেহেতু তাদের বাড়ি তিস্তার পাশেই পানি আসলে বাড়ি সরানো দূরের কথা মালামাল সরানোর সময় পাওয়া যাবে না। যে কোন সময় ৩-৪ ফুট জায়গা ভেঙে যেতে পারে এ ভয়ে আগাম বাড়ির জিনিষপত্র নিয়ে রাস্তায় বসবাস করছেন। ভাঙন রোধ হলে তারা বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান।
শুধু শরিফা বেগম ও আপেল মিয়া নয় তাদের মতো আরও অনেকেই রয়েছেন যারা তিস্তার ভাঙন আতঙ্কে গবাদি পশুসহ মালামাল নিয়ে রাস্তায় বসবাস করছেন।