সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং গ্রিনপার্ক এলাকার ট্যুরিস্ট গাইড সাদ্দান হোসেন খুনের ঘটনায় দুইজনকে গতকাল নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার দীন ইসলামের ছেলে মোঃ হুমায়ুন (১৮) এবং একই এলাকার মোঃ সানীর ছেলে মোঃ সজল (১৫)।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান।
পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান বলেন, এই হত্যাকান্ডের পর তার স্ত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে,কিন্তু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তেমন কোন ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় মারা যাওয়ার দিন দুজন লোকের সাথে সাদ্দাম হোসেনকে দেখা যায় কিন্তু তাদেরকে স্থানীয়রা চিনে না।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ জুলাই থেকে এসআই সুদিপসহ একটি টিম পুরোদমে কাজ শুরু করে। তদন্তের মাধ্যমে নানা তথ্য যাচাই বাছাই করে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই এবং ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এই দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে সাদ্দাম হোসেনের ব্যবহৃত স্যামসাং জে-২ মোবাইল ও ক্যানন ৭৫০ ডিএসএলআর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, তারা মুলত পর্যটকের ছদ্মবেশে সিলেটে এসে এমন কাজ করেছে। গত ১৪ জুলাই তারা সিলেটে এসে টার্মিনাল এলাকার হোটেল আল হকে রাত্রিযাপন করে। হোটেলের রেজিস্ট্রারে সজল নিজের নাম উল্লেখ করলেও হুমায়ুন নিজের নাম সাগর হোসেন উল্লেখ করে। ১৫ জুলাই তারা জাফলংয়ে ঘুরতে যায় এবং সাদ্দাম হোসেনকে টার্গেট করে। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে তারা সাদ্দাম হোসেনকে নিরিবিলি যায়গায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং তার সাথে থাকা মোবাইল ও ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ সুপার জানান সজল পেশায় বাসের হেলপার এবং হুমায়ুন জুতার দোকানের সেলসম্যান।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই জাফলং গ্রিনপার্ক এলাকা থেকে সাদ্দাম হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার ছেলে। পেশায় ট্যুরিস্ট গাইড হওয়ার পাশাপাশি সে ছবিও তুলত। প্রতিদিনের মতই ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ক্যামেরা নিয়ে পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য পর্যটনকেন্দ্র সংগ্রাম বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে সাদ্দাম বাড়ি থেকে বের হন।এরপর বিকেলবেলা জাফলং বন বিটের গ্রিনপার্ক এলাকায় স্থানীয় লোকজন তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।