মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের থাবায় কাবু হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা। রাজস্ব আদায় বন্ধ থাকায়,সামনে ঈদ এখনো বেতন পাননি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রথম শ্রেনীতে উন্নীত হওয়া এ পৌরসভা আয়তনের দিক থেকে ছোট হওয়ায় রাজস্ব আয় একেবারে কম। প্রধান হাট-বাজার ও অন্যান্য খাত থেকে পাওয়া আয় দিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হয়। তাই রাজস্ব আদায় বন্ধ থাকায় বেতন ভাতা পাননি এ পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান,ফুলবাড়ী পৌরসভায় কর্মরত মোট ৪৩জন নিয়িমিত কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন এর মধ্যে ৫জন কর্মকর্তা ও ৩৮জন কর্মচারী। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১২জন কাওন্সিলর রয়েছে। এর মধ্যে নয়জন পুরুষ কাওন্সিলর এবং তিনজন সংরক্ষিত মহিলা কাওন্সিলর রয়েছেন। তারা গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এখনো বেতন-ভাতা পাননি।
পৌরসভার কর্মচারীরা জানান, একে তো দেশে সংঙ্কটময় সময় পার হচ্ছে,অপরদিকে সামনে ঈদ বেতন-ভাতা না পেয়ে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ফুলবাড়ী পৌরসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন,গত ৫ মাস থেকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। পৌর তহবিল শূন্য থাকায় আসন্ন ঈদেও বেতন-ভাতা পাননি তারা।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে,করোনার প্রাদুর্ভাবে পৌরসভার আয় বন্ধ তাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ছাড়াও, বিদ্যুৎ, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন বিলও বকেয়া রয়েছে কয়েক লাখ টাকা,যা রাজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধ করা হয়। কিন্তু তহবিল শূন্য থাকায় তা পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক জানান, স্থানীয় তহবিল ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আদায়কৃত রাজস্ব তহবিল থেকে যা রাজস্ব আয় হয় তা থেকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌর পরিষদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। গত ২৬ মার্চ থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ হাট-বাজার, ব্যবস্যা কেন্দ্র ও অনান্য রাজস্ব আয়ের মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায়, পৌরসভার তহবিল একেবারে শূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ পৌর পরিষদের কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৌরসভার এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে।
পৌরমেয়র মুরতুজা সরকার মানিক দাবি করেন, অনেক পৌরসভায় ৩৬ মাস পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে, সেখানে ফুলবাড়ী পৌরসভায় বাকী রয়েছে কয়েক মাসের। তিনি ফুলবাড়ীসহ সকল পৌরসভাকে সরকারি প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।