ঢাকার সাভারে নিজের ১০ মাস বয়সী সন্তানকে চুরি করে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার চার দিন পর ভুক্তভোগী শিশুটিকে পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও আটক করা সম্ভব হয়নি অভিযুক্ত বাবাকে। আবারও সন্তান চুরি হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকলেও নিজের অসুস্থতা ও শিশু সন্তানের দেখভাল করার কথা চিন্তা করে মামলা করতে রাজি হননি মা। গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী নারী সাভারের শাহীবাগ এলাকার বাসিন্দা ফুলময় বালা দাস এসব কথা জানান। স্বামী ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের সজিব খান মুসলমান মেয়েকে বিয়ে করে নাম পাল্টেছে। বছর খানেক আগে থেকে ফুলময়কে ভরণপোষণ দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। মাদকের টাকা যোগাতে সম্প্রতি গার্মেন্টস থেকে পাওয়া মাতৃত্বকালীন টাকার একটা অংশ সজীব জোর করে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন ফুলময়। ফুলময় বালা বলেন, ‘আমি গার্মেন্টসে চাকরি করি। আমার স্বামী বাসের স্টাফ। গত এক বছর ধরে তিনি আমাকে ভরণপোষণ না দিয়ে গোপনে বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করছে। সন্তান প্রসবের সময় আমি আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সিজার করিয়েছি। এরপর গার্মেন্টস থেকে ৬০-৭০ হাজার টাকা মাতৃত্বকালীন ভাতা পেয়েছিলাম। এর আগে এসে সেখান থেকে কিছু টাকা জোর করে নিয়ে গেছেন তিনি। ফুলময় আরও অভিযোগ করেন, ‘আমার ১০ মাস বয়সী মেয়েকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়ার কাছে মাসিক ৩ হাজার টাকায় দেখভালের জন্য রাখি। ও জন্মের পর থেকে এভাবে অফিসে যাই। গত ৩০ আগস্ট দুপুরে কৌশলে আমার মেয়েকে চুরি করে নিয়ে যায় আমার স্বামী। খোঁজ না পেয়ে পর দিন সাভার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। পরে পুলিশ রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আমার বাচ্চাকে উদ্ধার করে দেয়। এক দম্পতির কাছে ৮০ হাজার টাকায় আমার সম্তানকে বিক্রি করেছিল আমার স্বামী। এ সময় ফুলময় আতঙ্কে আছেন জানিয়ে বলেন, ‘আমরা স্বামী আবারও আমার সন্তান চুরি করতে পারে। আমি এখন কীভাবে ওরে অন্যের কাছে রেখে গার্মেন্টসে যাব? তাহলে মামলা করেননি কেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ। কীভাবে আদালতে যাতায়াত করব? আর বাচ্চাটারে দেখব কখন, গার্মেন্টসে যাব কখন? তাই মামলা করিনি। তবে জিডি করেছি। এবিষয়ে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান সিকদার বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় আজ উত্তরা থেকে শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার বাবা সজিবকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় যে দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নিয়েছিল, তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শিশুটির মা মামলা করতেও রাজি হয়নি।