রংপুর সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে বেতন বৃদ্ধি , সিও নয় ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন, নতুন নিয়োগ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাসহ ১১দফা দাবিতে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন রংপুর জেলার উদ্যোগে দীর্ঘ ২মাস ধরে মেয়রের নিকট এ বিষয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। ২০ আগষ্ট, বেলা ১২টায় সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে প্রতিনিধি টিম গেলে মেয়র বলেন ১০% হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে যা হিসেব করে দেখা গেল আগে ছিল ঝাড়ুদারদের ২২০০টাকা আর এখন ২৫০টাকা বেড়ে হলো ২৪৫০টাকা, ট্রাকমর্মীদের পূর্বে ছিল ৭০০০টাকা এখন ১০%বেড়ে হলো ৭৭০০টাকা। যা বাজার দরের সাথে অসংগতিপূর্ণ। এটা শুনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বিক্ষোভ করে। পরে সিটি থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মীদের নিয়ে প্রেসক্লাব চত্ত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সহ-সভাপতি রাজু বাসফোরের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন রংপুর জেলার সভাপতি সুরেশ বাসফোর, উপদেষ্টা লিটন বাসফোর, শবরন বাসফোর, সাধারণ সম্পাদক সাজু বাসফোর আরো বক্তব্য রাখেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ঝাড়ুদার মুন্নি রানী, আদুরি বেগম, ট্রাককর্মী শুকুর রানা, সাইদার মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন,১২ঘন্টার মধ্যে এই দাবি না মানলে ধর্মঘট করতে বাধ্য হব। আমরা হরিজন জনগোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে বংশপরম্পরায় রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত,হাট-বাজার, পৌরসভা-সিটি কর্পোরেশনসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আসছি। বর্তমান সমাজে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সিটি কর্পোরেশনের অল্প বেতনে সংসার পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে অসুস্থতা বা সমস্যায় পরে কাজে না গেলে সিওরা হাজিরা কেটে নেয়,ছাটাইকরণের হুমকি দেয়,গালিগালাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাককর্মীসহ অন্যান্য পদে টাকা ছাড়া চাকুরী হয় না। অভাব অনটনে হাজিরা কাটা কিংবা নতুন নিয়োগ না হওয়া,আবার যারা কর্মরত আছি তাদেরও কাজের নিশ্চয়তা না থাকা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য হুমকি স্বরুপ। তাই আমরা ১১দফা দাবিতে দীর্ঘ এক মাস ধরে মেয়রের নিকট ঘুরছি। নিম্নের দাবিগুলো তুলে ধরেন ১. রাত্রীকালীন (নাইট শিফট ) কাজের ক্ষেত্রে শহর-গ্রামের রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো, যাতায়াত সুবিধা, নিরাপত্তা, নিজ ওয়ার্ডে কাজ ও নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে হবে। ২. বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। ৩. কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চাকুরী স্থায়ী করতে হবে। ৪. নতুন নিয়োগ দিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জাত হরিজনদের নিতে হবে। ৫. সিও নয়,ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন চাই । ৬. নিরাপত্তা সরঞ্জাম প্রদান করতে হবে।(রেইন কোর্ট,হেড লাইট,সু-গ্লোভস, আইডি কার্ড ইত্যাদি) ৭. সিওদের অনিয়ম,দূর্নীতি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৮. অকারণে ছাঁটাই করা চলবে না,বন্ধ কর। ৯.অসুস্থকালীন বিশেষ সহযোগিতা ও মৃত্যুকালীন পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে। ১০. নারীদের গর্ভকালীন ছুটি (নূন্যতম ৬ মাস) নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিমাসে কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করতে হবে। ১১. সাপ্তাহিক একদিন ছুটি, উৎসবকালীন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছুটি ও ভাতা প্রদান করতে হবে। দীর্ঘদিন কর্মরত কর্মীর অবসরকালীন সময় সম্মানী ভাতা প্রদান করতে হবে।