বগুড়া জেলা জুড়ে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি কৃষকরা। শীতল বাতাসে পাকা সোনালী আমন ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বইছে প্রফুল্লতা। মাঠে মাঠে আমন ধানের সোনালী রঙে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
জানা যায়, বগুড়া সদর, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাবতলী, নন্দীগ্রাম, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ, শেরপুর ও ধুনট উপজেলার মাঠঘাট জুড়ে সোনালী বর্ণ ধারণ করা আমন ধানের নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন চোখে পড়ার মতো। ধানের আভা দেখে উচ্ছ¡াসে ভড়ে ওঠছে কৃষকের মন-প্রাণ। তাদের মনে স্বপ্ন জেগেছে নতুন চালের ভাতের পাশাপাশি পরিবার, পরিজন, নাতি-নাতনিকে নিয়ে পিঠে খাওয়ার উৎসবে মেতে উঠবেন। পাকা ধান কাটতে হাতে কাঁচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য খুশিতে আজ্ঞিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা। পাকা ধানে ভরে উঠবে কৃষকের গোলা। ধান ক্ষেত থেকে কৃষকের বাড়ির উঠোন, সবখানে এখন কৃষক কৃষানীর ব্যস্ততা। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটা। অগ্রহায়ণে পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকেই কাটা ও মাড়াইয়ের ধান বাজারে বিক্রিও শুরু করছেন। বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। কৃষি বিভাগ বলছে এবার ধান অনেক ভালো হয়েছে। এদিকে কৃষকরা বলছেন, উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য না পেলে কৃষকেরা কৃষি চাষাবাদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিকটন। গত বছর জেলায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৪ মেট্রিকটন। এবার গড় ফলন প্রায় ১৬ মণ। জেলা জুড়ে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে কৃষকরা সহজে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
বগুড়া সদর উপজেলার দোবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর প্রামানিক জানান, অন্যের ৫ বিঘা জমি বছর ভিত্তিক চুক্তি নিয়ে (সন পর্তন) বিআর ৪৯ জাতের ধান আবাদ করে এখন কাটা শুরু করেছেন। বিঘাপ্রতি ১৬ থেকে ১৮ মণ ধান পেলেও দাম নিয়ে তার চিন্তা। বাজারে ভালো দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
শাজাহাপুর উপজেলার টেংগামাগুর হাটের আড়তদাররা জানান, বর্তমান বাজারে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মন আমন ধান সাড়ে ১১টাকা থেকে ১২টাকা দরে কেনা হচ্ছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিক টন। এবার গড় ফলন প্রায় ১৬ মণ। জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।