রাজধানীর গুলিস্তানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে নিহত মাদরাসাছাত্র হাফেজ রেজাউল ইসলামের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট এলাকায় সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সংগঠনটির নেতারা ছাড়াও হাফেজ রেজাউলের সহপাঠী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অংশ নেন। এসময় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট ও পল্টন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এর আগে হাফেজ রেজাউলকে হত্যার প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনটি। এরই অংশ হিসেবে আজ তারা বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়া আগামী ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) শাহবাগ চত্বরে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, রেজাউল করিম কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিলেন না। কিন্তু তারপরও তাকে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনীতিও করেছে আওয়ামী লীগ। এসময় তারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ জড়িত বলে দাবি করেন।
বক্তারা আরও বলেন, গত ২৮ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হাফেজ রেজাউল করিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে গুলিস্তানে আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা বলেন, এই খুনের সঙ্গে কারা জড়িত, তা এখন পরিষ্কার। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুনিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা মনে করি, অপরাধীদের গ্রেফতারে প্রশাসনের নীরবতায় মানুষকে আইনের প্রতি আস্থাহীন করে তুলবে।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্র ঐক্যের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, বাংলাদেশ ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি এহতেশামুল হক সাকি, খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি তানজিল আমির, ছাত্র জমিয়তের বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাহমুদ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে কয়েক’শ নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম থেকে পুরানা পল্টন মোড় হয়ে কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা মিছিলটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।