জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৭৩ শিক্ষার্থীসহ ৮১ সদস্যের একটি টিম ফিল্ডট্রিপে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে যায়। এসময় রবিবার সন্ধ্যায় জবি ছাত্রীর সাথে অশোভন আচরন করে স্বপ্নপুরীর স্টাফরা। ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় স্টাফরা জবির ছাত্র ও শিক্ষকের উপর হামলা করে। এতে ১২ জন শিক্ষার্থীসহ ৩ জন শিক্ষক আহত হয়। ৩ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মাথায়, হাতে ও পায়ে গুরুতর জঝম হয়েছে। নবাবগঞ্জ থানার আফতাবগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ উপ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, শিক্ষা সফরে (ফিল্ডওয়ার্কে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের একটি টিম বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে এসেছিল। ঢাকায় ফিরতি পথে তারা নবাবগঞ্জের বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীর বিভিন্ন রাইডে আনন্দ বিনোদন করে। এসময় বেখেয়ালে জনৈক শিক্ষার্থী একটি ব্যাগ রাইডে ফেলে রেখে যায়। ফেরত নিতে গিয়ে রাইড অপারেটরদের সাথে বাক বিতণ্ডার জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। এসময় ধাওয়া পাল্টা এবং লোহার রডসহ লাঠির আঘাতে ৩ জন গুরুতরসহ ১২ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহত ৩ ছাত্রকে রেফার্ড করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাত আল মামুন জানান, আহতদের মধ্যে আরাফাত হোসেন এবং জাহিদুল ইসলাম তালকা নামে দুই ছাত্রকে এস আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ভর্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের জানান,” এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমি ইউএনওসহ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা সাহায্য করেছে। পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এখনো শিক্ষক শিক্ষার্থীরা হোটেলে পৌঁছাতে পারে নি।” ফিলওয়ার্কে মূল দায়িতে থাকা অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাৃ হোসেন জানান,” আমরা এখনো থানায় আছি। এখানে কাজ শেষ করে হোটেলে যাবো। মামলা করা হবে কিনা দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আসছে। দেখা যাক কি করা যায়।” ঘটনাস্থল থেকে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করলে তাদের (স্টাফ) সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে অতর্কিতভাবে তারা রড ও লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আঘাত করে। আমাদের ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। দুইজন শিক্ষার্থীর মাথা ফেটেছে ও তার মধ্যে একজনের হাতও ভেঙেছে। আহত শিক্ষার্থীদের আমরা দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছি।’ উক্ত ঘটনায় ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল। এদিকে শিক্ষার্থীদের যেকোনো সহযোগিতা লাগলে প্রস্তুত আছে জবি প্রশাসন।