বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন আজ সোমবার বিকাল ৪টায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হবে। সভাপতিত্ব করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় চ্যান্সেলর জনাব মোঃ আবদুল হামিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখবেন মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি। ভারতের বিহারে ইউনিভার্সিটি সার্ভিস কমিশনের সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাজবর্ধন আজাদ সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। সমাবর্তন উপলক্ষে স্টিয়ারিং কমিটি ও বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমাবর্তনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সমাবর্তন উপলক্ষে মাননীয় চ্যন্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ আবদুল হামিদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর উ”চতর শিক্ষা প্রদান ও গবেষণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যা”েছ। চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং তা জনগণের স্বাস্থ্য সেবায় প্রয়োগ ঘটাতে দেশে চিকিৎসা গবেষণার ক্ষেত্রে আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। আমি আশা করি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে আরো উদ্যোগী ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। এছাড়া শাহবাগের পুরাতন বেতার ভবনে আরেকটি বিশ্বমানের হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমাবর্তন গ্রাজুয়েট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান বা নবীন গ্রাজুয়েটদের একাডেমিক অর্জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকান্ড মুল্যায়ন করতে সহায়তা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার পথিকৃৎ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কাছে জাতির প্রত্রঅশা অনেক। যেসব চিকিৎসক ও গবেষক চতুর্থ সমাবর্তনের মাধ্যমে ডিগ্রি অর্জন করলেন, তাঁরা দেশপ্রেমের মহান চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্জিত জ্ঞান বৃহত্তর মানবতার কল্যাণে কাজে লাগাবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি তাঁদের অব্যাহত সাফল্য কামনা করি। বাণীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। দেশের মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষার বিকাশে আমাদের সরকার ১৯৯৮ সালে দেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন এই বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষার প্রসার ও বিকাশ, স্বাস্থ্যখাতে উচ্চতর গবেষণা এবং বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশের চিকিৎসা জগতে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সকল ধরণের গবেষণা উপযোগী আধুনিক যন্ত্রপাতি সম্বলিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ করেছি। এছাড়া শাহবাগের পুরাতন বেতার ভবনে আরেকটি বিশ্বমানের হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী সকল শিক্ষার্থী রোগীদেরকে উন্নতর চিকিৎসাসেবা প্রদান ও চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা অবদান রাখাসহ দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবাকে আরও সমৃদ্ধ করবেন এবং জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ সমাবর্তন উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে বলেছেন, বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার তার সবকিছুই করার চেষ্টা করা হ”েছ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়কে বিশে^র বুকে একটা রোল মডেল হিসাবে প্রতিষ্ঠা করব এই হলো চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য হিসেবে আমার অঙ্গীকার।এবারের সমাবর্তনে সাড়ে তিন হাজার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, সেবিকাবৃন্দ অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মেডিসিন অনুষদে প্রায় আট শত জন, সার্জারি অনুষদে প্রায় এক হাজার চারশত জন, শিশু অনুষদে প্রায় তিন শত জন , বেসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল অনুষদে পাঁচ শতাধিক জন, প্রিভেনটিভ এন্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদে প্রায় তিন শত জন, ডেন্টাল অনুষদে শতাধিক স্নাতকোত্তর চিকিৎসকবৃন্দ এবং নার্সিং অনুষদে শতাধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সেবিকাবৃন্দ । এই সমাবর্তনে ৩৫ জন মেধাবী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, সেবিকাবৃন্দকে চ্যান্সেলর কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে।