টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার ইয়াবাসহ তিনজন পাচারকারী র্যাব-১৫ এর হাতে আটক হলেও মূল নায়ক ইউসুফ এখনো অধরা রয়েছে। এতে হতাশা প্রকাশ করেছে শাহপরীর দ্বীপের সচেতন মহল৷
র্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল গত ১৬/১১/২০২২ টেকনাফ পৌর এলাকা হাজী মার্কেট মিষ্টিবন দোকানের উত্তর পাশে লামার বাজার হইতে ঝর্ণাচত্তরগামী পাকা রাস্তার নিকট এক অভিযান পরিচালনা করে।আটককৃতদের কাছ থেকে ৭০ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
আটককৃতরা হল, টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ৯ নং ওয়ার্ড পশ্চিম বাজার পাড়া এলাকার অলী আহমদ এর ছেলে মো. শাহ আলম (৩০), একই এলাকার মৃত আবুল হাসেম এর ছেলে মফিজুর রহমান প্রকাশ মফিজ (৩০),উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩/ ব্লকএএ-৩ এলাকার তবারক হোসেন এর ছেলে নুর বশর (১৯)।
শাহপরীর দ্বীপের সচেতন মহল অনেকে বলছে, শাহপরীর দ্বীপ মিন্ত্রী পাড়া এলাকার কবির আহমদ এর ছেলে মোঃ ইউসুফ দীর্ঘ দিন ধরে চট্টগ্রাম, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করত। সেই সুযোগে এলাকার
দিনমজুর, হত দরিদ্র, দরিদ্র জেলে পরিবারের লোকজনকে ব্যবহার করে মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসা করে নামে- বেনামে জমি জমা কিনেছে। গড়েছে বিলাসবহুল বাড়ি। সুকৌশলে চলাচল করে লোকজনের কাছে আড়ালে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শাহপরীর দ্বীপ বাজার পাড়া স্কুলের পূর্ব পাশে একটি পানের দোকান দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, র্যাব-১৫ এর হাতে তিনজন আটক হলেও তাদের সিন্ডিকেট এর অন্যতম মূল নায়ক ইউসুফ এখনো অধরা রয়েছে। অনুসন্ধানেও ইয়াবার মূল গডফাদার হিসেবে নাম উঠে এসেছে। তারাই ঐ এলাকায় ইয়াবার ধারক-বাহক বলে সুনাম কুড়িয়েছে। তার কারণে এলাকার উঠতি অনেক যুবক-ছাত্র ফাঁদে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
এলাকার বেশ কয়েকজন জানান, র্যাব-১৫ সদস্যদের হাতে ৭০ হাজার পিস ইয়াবার মূল নায়ক ইউসুফকে আটক করলে এই এলাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসা অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে। শাহপরীর দ্বীপ এলাকাটি পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার ঘেষা হওয়া হওয়া সহজে ইয়াবা পাচার প্রবেশ করে। এমনকি সাগর পথে ফিশিংবোট দিয়ে অহরহ ইয়াবার চালান খালাস সম্পন্ন করে ইউসুফ সিন্ডিকেট এর গডফাদাররা। তাদের কাছ থেকে পাইকারী ও খুচরা মূল্যে ইয়াবা নিয়ে কক্সাবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করে। আবার এদের অনেকের বিরুদ্ধে মাদক মামলা না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় লোকজনকে বলে বেড়াই আমাদের বিরুদ্ধে দেশের কোন থানা মামলা নেই৷ আমাদের আটক করা অনেক কঠিন৷
র্যাব-১৫ এর হাতে ৭০ হাজার পিস ইয়াবার মূল নায়ক ইউসুফকে আটক দ্রুত আটক করলে বেড়িয়ে আসবে অনেক অজানা ইয়াবা ব্যবসার খলনায়ক এর কুকীর্তি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউসুফ বলেন- ৭০ হাজার ইয়াবার বিষয়ে আমাকে জড়াচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনা যাচ্ছে৷ কিন্তু ইয়াবা ব্যবসা আমি কোন দিন করিনি৷ এলাকার কিছু কিছু মানুষ আমার বিরুদ্ধে সড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, টেকনাফে ৭০ হাজার পিস ইয়াবাসহ তিনজনের আটকের ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন গডফাদার জড়িত রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় বহনকারীরা আটক হলেও মূল মালিকরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে শাহপরীর দ্বীপ মিন্ত্রী পাড়া এলাকার ইউসুফের বিরুদ্ধে মাদকের সংশ্লিষ্ট পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) আবদুল হালিম সাংবাদিকদের জানান, টেকনাফ উপজেলায় ইয়াবা পাচার ও সেবন ভয়াবহ আকার ধারন করছে। তার রেহাই থেকে জাতি ও দেশকে বাঁচাতে হবে।
ইউসুফ সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তদন্ত করে দ্রুত আটক করা হবে। মাদক ব্যবসায়ী যে কেহ হউক কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।