দুর্নীতির বিশাল অভিযোগ নিয়েই বেশ কয়েক বছর আগে বরখাস্ত হয়েছিলেন সেফ ব্ল্যাটার। ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফাকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছিল। নতুন করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন উয়েফা সেক্রেটারি জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো।
কিন্তু আবারও দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ফিফা। ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনোর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্পেশ্যাল সুইস প্রসিকিউটর স্টেফান কেলার। সুইস অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল লওবারের সঙ্গে ফিফা প্রেসিডেন্টের ‘গোপন বৈঠক’কে কেন্দ্র করেই ৩০জুলাই বৃহস্পতিবার এই মামলা করেছেন কেলার।
২০১৭ সালে বার্নের এক হোটেলে ইনফ্যান্তিনোর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন লওবার। সে সময় ফিফায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে পুরোদমে তদন্ত চলছিল।
কিন্তু অদ্ভুতভাবে ওই বৈঠকের কথা দু’জনের মধ্যে কেউ জনসমক্ষে স্বীকার করেননি। বরং যতবারই বৈঠকের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এড়িয়ে যান লওবার ও ইনফান্তিনো। যাদের দাবি দু’জনের মধ্যে কারও মনে নেই সেই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
কিন্তু দেখা যায় সেই সময় পনেরো মাসের মধ্যে সেটা ছিল ইনফ্যান্তিনো এবং লওবারের মধ্যে তৃতীয় বৈঠক। আর এখানেই বিতর্কের সূত্রপাত। সেই বৈঠক নিয়ে তদন্ত করেছেন কেলার। এরপরই দেখা গেছে, সেই বৈঠকে এমন অনেক জিনিস নিয়ে আলোচনা করা হয় যা বেআইনি। সে কারণেই এই ঘটনার পুরো তদন্ত হওয়া উচিত, যাতে পুরো ছবিটা সবার সামনে পরিষ্কার হয়।
গত শুক্রবারই আবার লওবার জানিয়েছিলেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তবে শুধু ইনফান্তিনো নন। বরং লওবার ও ভালাইসের প্রসিকিউটর রিনাল্ডো আর্নল্ডের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা করতে চলেছেন কেলার।
ফিফার বিরুদ্ধে বরাবরই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত শেপ ব্ল্যাটার ২০১৫ সালে ফিফা প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। এবার ইনফান্তিনোকে নিয়ে এই বিতর্ক কোন দিকে মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তবে ফিফার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, তারা এই তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সেখানেই নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে ইনফ্যান্তিনো বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে যে বৈঠকে বসেছিলাম, সেটা অবৈধ কিছু ছিল না। পুরোপুরি বৈধ এবং আইনসম্মত। এখানে কোনো আইন ভঙ্গ করা হয়নি। বরং, এই বৈঠকটা ছিল ফিফা প্রেসিডেন্ট হিসেবে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আমাকে, সেই বলে।’