গতকাল বুধবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য সেদিন অস্তমিত হয়েছিল। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলার মহান ব্যক্তিরা এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন। বাঙালির জাতিগত স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘ ২শ’ বছরের। ব্রিটিশদের দেশবিভাগের পর স্বাধীনতার যে সংগ্রাম শুরু হয়, তার চূড়ান্ত রূপ হচ্ছে মুজিবনগর সরকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে এই সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পরিচালিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলেও এই সরকারের গুরুত্ব ও ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন পাণওয়ার ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করে এই সরকার। একটি মুক্তি সংগ্রামকে রাষ্ট্রে পরিণত করারই এই সরকারের মূল পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য ছিল এবং তাদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন এবং রাষ্ট্রের কাঠামো ভাগ করা হয়। খুবির উপাচার্য আরও বলেন, মুজিবনগর দিবসসহ এ জাতীয় বিভিন্ন দিবসে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব উদ্যোগে দিবসটি পালন করা উচিত। এর মাধ্যমে আমরা নিজেরা যেমনি সমৃদ্ধ হবো, তেমনি নতুন প্রজন্মও মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিষয় জানতে পারবে। পাশাপাশি তারা দেশপ্রেমিক একজন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য তার বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। এছাড়া দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে বাদ জোহর দোয়া মাহফিল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা।