মনুষ্য মন ও প্রকৃতি যেনো একে অন্যের প্রতিরূপ, নিজেদের আবেগ কে প্রকাশ করে চলেছে সুনিপুণভাবে। বৃষ্টি যেনো মানুষেরই কান্নার একটি রূপ। কি চমৎকার ভাবেই মিলে যায় প্রকৃতির সাথে মানব মনের যত দ্বিধা – দ্বন্দ্ব, অনুনয়, অভিমানের গল্প। অনেকেই বলে প্রকৃতি বিলাস, আসলে প্রকৃতির ছোট্ট ক্ষুদ্র অংশ এই মানুষ, সে তো প্রকৃতির চিরায়িত ছন্দের সাথে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে।
মানুষের কান্না আর বৃষ্টি কতটাই না একে অন্যের প্রতিচ্ছবি প্রকাশ করে! দুজনেই নিজেদের অভিমান গুলো জমা করে মেঘ জমিয়ে বৃষ্টি নামায় প্রকৃতির বুকে। বাঁধ ভাঙ্গা অভিমান গুলো কখনো তীব্র বর্ষণ কখনো বা মৃদু বর্ষণে রূপ নেয়। কি তিক্ত এই অভিমান গুলো! কখনো বা তীব্র বিষাদ। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বা জীবন বিপন্ন!
বৃষ্টির পরে যেমন প্রকৃতি শীতল হয়ে পড়ে তেমনি ভাবে ভারাক্রান্ত মন হালকা বোধ করে। কখনো বা বজ্রধ্বনির মত আর্তনাদ চিৎকার বেরিয়ে আসে। বজ্রধ্বনি গুলো তো অতি আপন, সবার একান্ত ক্ষোভ, রাগ যেনো প্রকাশিত হয় এরই মাঝে।
ঘনো কালো মেঘ কখনো বা রক্তিম মেঘ যেনো কখনো অভিমান আবার কখনো রাগের বহিঃপ্রকাশ। শুধুই কি রাগ, ক্ষোভ, অভিমান? অবশ্যই না। সাদা তুলো তুলো মেঘ যেমন মনকে পুলকিত করে তেমনি তাদের ছুটে চলা দৃষ্টি নন্দন। যেনো সুপ্ত অনুভূতি গুলোর প্রকাশ, মৃদু আনন্দের শয্যা।
বৃষ্টি যে শুধু দুঃখ, কষ্ট হিসেবে আসে এমনও নয়। মানব হৃদয় যেমন খুশিতে কান্না করে তেমনি খুশির বৃষ্টি বারিধারায় রূপ নেয়। যেমন দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বস্তুকে পাওয়ার পরে আনন্দের কান্না তেমনি শুষ্ক, রোদ্দুরে তপ্ত দিন গুলোর শেষে কোনো এক বিকেলে প্রতীক্ষিত আনন্দের বৃষ্টির দেখা। প্রকৃতি প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথেই মিশে আছে ওতপ্রোত ভাবে রেখে যাচ্ছে তার অপার মোহ মানবকুল যাকে গ্রহণ করছে নিরন্তভাবে।
রোকাইয়া আক্তার তিথি
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়