বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মরণোত্তর দেহদান চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে। মরণোত্তর দেহদান একটি মহৎ কর্ম এবং পরোকালের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের প্লাস্টিনেশন ল্যাবে এই ধরণের দেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মরণোত্তর দেহদানকে উৎসাহিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু মরণোত্তর দেহদানই নয়, একজন ব্রেনডেথ রোগীর অঙ্গদানের মাধ্যমে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করে ৮ জন মানুষের জীবন রক্ষা করা যায় সেই ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট কার্যক্রমকেও উৎসাহিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। এমনকি প্রথমবারের মতো যারা মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন তাদেরকে নিয়ে এবং যারা দেহ দান করেছেন তাদের স্বজনদের নিয়ে একটি বিরল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ৬ জুলাই ২০২৩ইং তারিখ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ফোয়ারার সামনে সদ্য প্রয়াত গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক শিপ্রা বোসের মরণোত্তর দেহ গ্রহণকালে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকেরা এ মরণোত্তর দেহ হস্তান্তর করেন। শিপ্রা বোসের দেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের শিক্ষকবৃন্দসহ গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ডা. ইমরান এইচ সরকার ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, শিপ্রা বোস দেহদানের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। শিপ্রা বোসের মত মানবকল্যাণে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে সহযোগীতাকারীদের কৃতজ্ঞ চিত্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকবৃন্দ স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা মরণোত্তর দেহদান করেছেন এবং এমন দেহদানে অঙ্গীকার করেছেন, তাদেরকে আমরা সম্মানিত করেছি। তাদের জন্য আমরা আলাদা কার্ড করার উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের সম্মান দেখানোর জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বড় বড় কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছি। যাতে অন্যরা মরণোত্তর দেহদানে উৎসাহ পান। শিপ্রা বোস নব্বইয়ের ছাত্র এবং গণ অভুত্থানের সক্রিয়কর্মী। তিনি দীর্ঘ ১ বছর ক্যান্সারের সাথে লড়াই শেষে গত শনিবার ১ জুলাই সকাল ১১টা ১৮ মিনিটে ব্যাংককে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি জাতিসংঘে সিনিয়র জেন্ডার উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে শাহবাগের গণজাগরণের নেপথ্যের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। শিপ্রা বোসের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন। মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেছিলেন আর সেখান থেকেই তাঁর ছাত্র ইউনিয়নের সাথে পথচলা শুরু হয়েছিল।