চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘর মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত হামলা,জাতীগত নিধন ও অত্যাচারের প্রতিবাদে বুধবার (৫ জুলাই) পঞ্চগড়ে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ৫ জুলাই উইঘরদের ‘উইকমিরি ম্যসাকার ‘ দিবস উপলক্ষে সংগঠনটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, প্রবীণ সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, দিশারী নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কলামিষ্ট মাহমুদ হোসেন সুমন, তরুণ সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম শান্তি, শ্রমিক নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদ, ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম ইরান, সাংবাদিক ইনসান সাগরেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। বক্তারা, অবিলম্বে চীনের হাতে আটক দশ লাখ উইঘর পুরুষকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেওয়ার জোর দাবী জানান। চীনের উইঘর মুসলিমদের ওপর অত্যচার বন্ধ করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরী করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহবান জানান। মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের ৫ জুলাই মুসলিম উইঘুররা তাদের স্বদেশের রাজধানী উরুমকিতে চীনা দখলদার সেনাবাহিনী এবং তার ঔপনিবেশিক হান জনগোষ্ঠির দ্বারা নির্মমভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছিল। ওই যৌথ হামলায় দু হাজারের অধিক উইঘর নারী ও পুরুষ নিহত হয়। পরবর্তি এক সপ্তাহজুড়ে রাষ্ট্রিয় সাহিয্যপুষ্ট হান জনগোষ্ঠি পিটিয়ে কুপিয়ে আরও কয়েক হাজার উইঘর নাগরিকদের হত্যা করে। চীনা মিডিয়া ও রাষ্ট্রিয়ভাবে বিষয়টি গোপন রাখা হলে পরবর্তিতে এ খবর দেশের বাইরে চলে যায়। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যাটি ৭ হাজারের কাছাকাছি বলে উল্লেখ করা হয়। বিশ্বজুড়ে উইঘুর প্রবাসীরা প্রতি বছর দিবসটি স্মরণে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের আয়োজন করে। এদের সঙ্গে গত বছরগুলোতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের মানবতাকামী মানুষরা। বক্তারা বলেন, গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার নামে উইঘর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালোনো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দেওয়ার আহবান জানান। বক্তারা আরও বলেন, প্রতিটি মানুষের ইতিহাসে উদযাপন বা স্মরণ করার জন্য বিশেষ দিন রয়েছে। জনগণ হিসাবে, চীনা উইঘুর মুসলিমদের উদযাপন বা মনে রাখার মতো অনেক বিশেষ দিন রয়েছে। ৫ই জুলাই তার মধ্যে একটি অন্যতম মর্মান্তিক দিন।