স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি) প্রকল্পের আওতায় ফ্রিতে চারমাস মেয়াদি ‘মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইন্টেনেন্স’ প্রশিক্ষণ শিখানোর নিয়ম। কিন্তু নওগাঁ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) তে প্রশিক্ষণ নিতে মিষ্টি খাওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রতি দেড় থেকে ২ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। এ অনিয়মের সাথে জড়িত টিটিসি’র সহকারি ইনস্ট্রাক্টর আব্দুল জব্বার ও ল্যাব সহকারি সোহাগ আলম। টিটিসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে জানুয়ারি মাস থেকে স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি) প্রকল্পের আওতায় ফ্রিতে চারমাস মেয়াদি ‘মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইন্টেনেন্স’ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বছরে তিনবার প্রশিক্ষণ হয়। প্রতি আসনে প্রশিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ জন। মোট ৮০ দিন প্রশিক্ষণ হবে এবং শতকরা ৮০ ভাগ উপ¯ি’ত থাকতে হবে। জনপ্রতি প্রতিদিন ১৫০ টাকা ভাতা বরাদ্দ। এ পর্যন্ত মোট ৩৬০ জন ভর্তি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছে ৩৪০ জন। এ প্রকল্পের আওতায় কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনবল সৃষ্টি, আমদানি বিকল্প যন্ত্রাংশ তৈরি করা, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করায় মূখ্য উদ্যেশ্য। টিটিসিতে মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইন্টেনেন্সে ফ্রি প্রশিক্ষণে মিষ্টি খেতে এক প্রশিক্ষণার্থীকে ল্যাব সহকারি সোহাগ আলম কাগজপত্র এবং টাকা সহ সহকারি ইনস্ট্রাক্টর আব্দুল জব্বার এর সঙে দেখা করতে বলেন। এর দুইদিন পর দুই হাজার টাকা এবং কাগজপত্র নিয়ে আব্দুল জব্বার এর সঙে দেখা করেন। এসময় ওই প্রশিক্ষণার্থী কিছু টাকা কম নেওয়ার অনুরোধ করলে ১ হাজার ৫০০ টাকা নেন আব্দুল জব্বার। টাকা নেওয়ার এমন একটি ভিডিও এ প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষণ আছে। ফ্রিতে প্রশিক্ষণ করানোর কথা থাকলেও কৌশলে চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর মুখ না খুলতে প্রশিক্ষণার্থীদের সাবধান করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কোন প্রশিক্ষণার্থী আর এসব বিষয়ে কথা বলতে চান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার ওই প্রশিক্ষণার্থী বলেন- ড্রাইভিং শিখতে ভর্তি হওয়ার জন্য টিটিসিতে সোহাগ আলম এর সঙে সাক্ষাত করা হয়। তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পরে দেখা করতে বলেন। কাগজপত্র নিয়ে পরে আবারও তার কাছে যাওয়া হলে তিনি বলেন ভর্তির জন্য কোন টাকা লাগে না। তবে শিক্ষকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য কিছু খরচ করতে হবে। পরে তিনি টাকা নিয়ে সহকারি ইনস্ট্রাক্টর আব্দুল জব্বার এর দেখা করতে বলেন। দুইদিন পর কাগজপত্র এবং টাকা নিয়ে আব্দুল জব্বার এর সঙে দেখা করি। এসময় কিছু টাকা কম নেওয়ার অনুরোধ করা হলে তিনি ১ হাজার ৫০০ টাকা নেন। প্রতিষ্ঠানের সহকারি ইনস্ট্রাক্টর আব্দুল জব্বার বলেন, মিষ্টি খাওয়ার জন্য ১৫০০ টাকা নিয়েছিলাম। টাকা নেওয়া ভুল হয়েছে। পরে টাকা ফেরত দিয়েছি। অন্য কারো কাছ থেকে কখনো টাকা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। নওগাঁ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ওহিদুর রহমান বলেন, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রপান্তর করা এবং দেশ ও বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ানো। তবে প্রশিক্ষণের নামে টাকার নেওয়ার বিয়ষটি আমার জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার একাডেমিক কমিটি আছে তারা বিষয়টি দেখবেন। যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।