লক্ষ্মীপুরের পোদ্দার বাজারে যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন আলমগীর হোসেন (৩৮) নামে আরও একজন। বুধবার (৩ মে) জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবীরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আলমগীর সদর উপজেলার উত্তর মাগুরী গ্রামের আবু কালামের ছেলে। এর আগে মঙ্গলবার (২ মে) সন্ধ্যায় দেওয়ান ফয়সাল নামের এক আসামি একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান। পুলিশ জানায়, আলমগীর ২০১৩ সালের দিকে সন্ত্রাসী মাসুম বিল্লাহ ওরফে লাদেন বাহিনীর সদস্য ছিলেন। পরে সে আবুল কাশেম জেহাদীর বাহিনীতে যোগ দেয়। নোমান-রাকিব হত্যার ঘটনায় তিনি সরাসরি জড়িত। মঙ্গলবার তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার হত্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবীরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কদু আলমগীর আদালতকে জানায়, যুবলীগ নেতা নোমানের বিষয়ে দু’জন লোক ঘটনার দিন দুপুরে মোটরসাইকেলে করে তার বাড়িতে যান। তারা তাকে বলেন- একটা টার্গেট আছে, তাকে সাইজ করতে হবে। তাকে বশিকপুরে যেতে বলেন। পরে আলমগীর ওই দুইজনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে নাগেরহাট বাজারে যান। এরপর তারা হেঁটে একটি ফাঁকা মাঠে যান। সেখানে আরও ৩৫ থেকে ৪০ জন ছিলেন। তারা সাত থেকে আটজন করে পাঁচ ভাগে ভাগ হয়ে যান। এ সময় একজন অস্ত্র নিয়ে এসে সবার হাতে তুলে দেন এবং কার্যক্রম ঠিক করে দেন। অস্ত্রের মধ্যে বন্দুক এবং পিস্তল ছিল। তার দলে ৮ জন ছিল। ব্যাকআপ পার্টি হিসেবে কাজ করেন তারা। ঘটনাস্থলের অদূরে করাত কলের পাশে প্রায় ৪৫ মিনিট ওৎ পেতে থাকেন। পরে তারা গুলিন শব্দ শোনে দৌড়ে এসে দেখে রাকিব ইমাম পড়ে আছে। নোমান পালানোর চেষ্টা করলে ৩ জন তাকে ধরে গুলি করে হত্যা করে। নোমান মারা গেলে তাদের গ্রুপটি নাগেরহাট মাদরাসার সামনে যায়। সেখানে অটোরিকশা ছিল। পাঁচজন অটোরিকশায় করে চলে যান। বাকি ৩ জন মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হত্যাকাণ্ডে সে নিজেও পিস্তল ব্যবহার করেছে। ঘটনা শেষে অস্ত্রগুলো ওই ব্যক্তির কাছে ফেরত দিয়ে দেন। পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, আলমগীরের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। অস্ত্র, মাদক, দস্যুতা, অপহরণ এবং বিস্ফোরণ আইনে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা, নোয়াখালীর চাটখিল এবং চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো হয়েছে। ঘটনার পরদিন আলমগীর ঢাকায় পালিয়ে যায়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে ছবি শনাক্তের মাধ্যমে আলমগীরকে ধরতে সক্ষম হই। পাঁচজনের পরিচয় পুলিশকে নিশ্চিত করেছে সে। অনেক বড় পরিকল্পনার মাধ্যমে তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। মামলার তদন্তে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কাজ করেছে।