রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী হারিয়েছে তাদের সর্বস্ব। মঙ্গলবারের (৪ এপ্রিল) অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্বান্ত এসব ব্যবসায়ীর এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে। শুধু তাই নয় ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ ব্যবসায়ী পরিবারগুলোর একমাত্র উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। শুধু চোখের জল ফেলে নিজের অসহায়ত্বের বর্ণনা ছাড়া যেন তাদের কিছুই করার নেই। জানা যায়, দু’দিন আগেও তারা স্বপ্ন দেখতেন চাঁদ রাতে ব্যবসার সব ঋণ পরিশোধ করে পরিবার পরিজন নিয়ে ইদ করবেন। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না পারা এসব ব্যবসায়ী ঋণ করে লাভের আশায় নতুন করে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। ব্যবসা পরিচালনায় কেউ স্ত্রীর সোনার গহনা বন্ধক রেখে, কেউ এনজিও থেকে আবার কেউবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। কেউই জানতো না তাদের আশার এমন স্বপ্নভঙ্গ হবে। এসব ব্যবসায়ী নিজের অসহায়ত্বের বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলছেন। ঋণ পরিশোধের কথা মনে করে চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছেন। এই মার্কেটে তিনটি দোকান ছিলো নীলিমা গার্মেন্টস-এর মালিক লিটন মিয়ার। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ব্যবসার জন্য গত মাসে ১৮ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। লোন পরিশোধ তো দূরের কথা সব হারিয়ে পরিবার নিয়ে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। ৩০ বছরে তিল তিল করে অর্জিত সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই গেছে- এ কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার মার্কেটের ২য় তলার মাসুম নিউ কালেকশন এর স্বত্বাধিকারী ছিলেন মো. মাসুম মিয়া। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, একটি গোডাউন ও দু’টি দোকানে থাকা প্রায় কোটি টাকার মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে। ব্র্যাক ব্যাংক ও মাল্টিপারপাস থেকে ব্যবসার জন্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। সবকিছু আগুনে পুড়ে যাওয়ায় এখন দিশেহারা এ ব্যবসায়ী। আরেক ব্যবসায়ী মহানগর কমপ্লেক্সে নিঝুম এন্ড নিশু গার্মেন্টস-এর মালিক আনোয়ারুল আজিম সোহাগ বলেন, ঐ মার্কেটের সি ব্লকে তার তিনটি দোকানে থাকা প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যবসার জন্য একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কীভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।