নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদী এখন মরা খালের পরিণত হয়ে ইরি ধান ও সবজি চাষ হচ্ছে। এটা এক ধরণের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়ের পূর্বাভাস বলা চলে। বদলগাছী উপজেলার কোল ঘেঁষে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীতে বর্ষার মৌসুমে দুই মাস জোয়ার থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে ছোট যমুনা নদী তার আপন সত্তা হারিয়ে আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে কোথাও কোথাও বোরো ধানসহ বিভিন্ন সবজির ফসল করছে স্থানীয় ভূমিহীন কৃষকরা। অথচ এই নদীই ছিল এক সময় এই এলাকার মানুষের যোগাযোগ অন্যতম ব্যবস্থা। তীব্র গরমে গ্রামের ছোট ছেলে মেয়েদের নদীর জলে সাঁতার কাটা দৃশ্য, এখন শুধু যেন স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বদলগাছীর এই ছোট যমুনা নদীই যেন নিষ্প্রাণ, মরা খালে পরিণত হয়ে পড়েছে। বদলগাছীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত সেই খর স্রোত ছোট যমুনা নদী শুধু বর্ষাকালে কয়েকদিনের জন্য ফুটে ওঠে। বাস্তব চিত্র এখন নদীর তলায় চাষাবাদ হচ্ছে। উপজেলার সচেতন প্রবীনরা বলেন, তাদের ধারণা আগামী ১০ বছর পর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কবির কাব্য কথা কিংবা শিল্পীর গানের কথার মতই হয়ত বা মনে করবে এই খানে এক নদী ছিল। বদলগাছীর কাদিবাড়ী ঘাটে প্রবীণ সাধু মাঝি বলেন, নদীর গতিপথ নদীর প্রাণ। সেই গতিপথ যদি হয় রুদ্ধ আর ভরাট তাহলে নদীতে আর পানি থাকবে না। চলবে না নৌকা গাইবে না মাঝি গান। এখন নদী প্রায় নিষ্প্রাণ। তেজাপাড়া গ্রামের আশাফ উদ্দীন, মজিবর রহমান, ভুট্টুসহ অনেকেই বলেন, আমরা নদী শুখানো পেয়ে শুধু বোর মৌসুমে ধান চাষ করি। বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাবাব ফারহান বলেন, উপজেলাতে ছোট যমুনা নদীতে প্রায় ৯৫ হেক্টর নদীর চরে ধান চাষ হয়েছে। তাই সচেতন মহলের অভিমত আমাদের এই ছোট যমুনা বাঁচাতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে সেই সঙ্গে সরকার যদি মনে করে নদী খননের মধ্য দিয়ে আবারও ফিরিয়ে আনবে নদীর সেই নাব্যতা ও ভরা যৌবন। উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান বলেন, নদী নতুন করে খনন করতে হবে। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মো. ফয়জুর রহমান বলেন, ছোট যমুনা নদীর সরকারিভাবে প্রকল্প তালিকা করে দেওয়া হয়েছে। পাশ হয়ে আসলে খননের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।