বাসভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বিনোদপুর, তালাইমারী অংশে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে এই সড়কে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। শুধু রাস্তাই নয়, রাবির প্রধান ফটক দখল করে আছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা রাবির প্রধান ফটক দখল করে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ করছে । শনিবার (২মার্চ) দুপুর ১টার দিকে রাবির বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এমনকি কোনো যানবাহন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে বাহিরাগত কাউকে দেখলে তারা মারমুখি হয়ে তেড়ে যাচ্ছেন। বলা যায় পুরো রাবি ক্যাম্পর ও এলাকার রাস্তা দখল নিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে দ্বিতীয় দিনের মত উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে রাবি । গতকাল রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করছে চারুকলা বিভাগের সামনে। এ সময় তারা শিক্ষাদের উপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী রাবি ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে। এসময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিসি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এলে তাকে সাবাস বাংলা মাঠে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিসি সাবাস বাংলা মাঠে অবরুদ্ধ ছিল। বর্তমান ভিসিকে সাবাস বাংলা মাঠ থেকে রাবির শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবন ঘেরাও করলে খবর পেয়ে সেখানে সাংবাদিকরা ছবি তুলতে যান। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় শিক্ষার্থীরা। তারা কয়েকজন সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাংচুর করে। এদিকে শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে ভিসির বাস ভবন ঘেরাও করে রাখে। তাদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় ও পুলিশ সদস্যদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে পারিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন আছে। বর্তমান থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় রাবি এলাকায়। শনিবার রাত ১০টার দিকে সাত প¬াটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এরআগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী সাথে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেলের আঘাতে এবং শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জন আহত হয়।